মঙ্গলবার ০৮ অক্টোবর ২০২৪ ২৩ আশ্বিন ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

অনামিকার ঘনিষ্ঠতার ফাঁদে উচ্চ মহলের লোক
প্রকাশ: বৃহস্পতিবার, ২২ জুন ২০২৩, ১১:০৩ পূর্বাহ্ণ

নাম অনামিকা খানম (২৪)। মাদকো জড়ায় নবম শ্রেণিতেই। নেশা এতো পেয়ে বসে যে, বর্তমানে একটি বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের বিবিএ’র এই শিক্ষার্থী, নেশার টাকা জোগাতে উচ্চবিত্ত, প্রশাসন ও রাজনীতিবিদদের টার্গেট করে বন্ধুত্ব গড়ে অশ্লীল ভিডিও ধারণ করে করতেন ব্লাকমেইল। হাতিয়ে নিতেন টাকা।

পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগ (সিআইডি) বলছে, এ তরুণীর প্রধান কাজ প্রতারণা ও ব্লাকমেইলের মাধ্যমে টাকা আত্মসাৎ করা। তার ফাঁদে ব্লাকমেইলের শিকার হয়েছেন কয়েক ডজন উচ্চবিত্ত পরিবারের সন্তান, প্রশাসনের কর্মকর্তা ও রাজনীতিবিদ। হাতিয়েছেন লাখ লাখ টাকা। নেশার টাকা জোগাতেই অনৈতিক পথ বেছে নেয়া অনামিকা চলেন আভিজাত্যের সঙ্গে।

কিন্তু শেষরক্ষা হয়নি অনামিকার। মঙ্গলবার (২০ জুন) দিবাগত রাতে নারায়ণগঞ্জের ফতুল্লা এলাকা থেকে থেকে প্রতারক এ তরুণীকে গ্রেপ্তার করে সিআইডির সাইবার ইন্টেলিজেন্সের বিশেষ একটি টিম।

সিআইডির সাইবার ইউনিটের বিশেষ পুলিশ সুপার (এসএসপি) রেজাউল মাসুদ জানান, এই তরুণীর ব্লাকমেইলের হাত থেকে বাঁচতে পারেননি তার ঘনিষ্ঠ বান্ধবীও। বন্ধবীর ফোন থেকে ব্যক্তিগত ছবি সরিয়ে বন্ধবীকেই ব্লাকমেইল করেন তিনি।

পরে সেই বান্ধবীর অভিযোগের ভিত্তিতে অনামিকাকে গ্রেপ্তারের পর জিজ্ঞাসাবাদে মেলে অনেক চাঞ্চল্যকর তথ্য। তার কাছ থেকে প্রতারণা ও ব্ল্যাকমেলিংয়ে ব্যবহৃত তিনটি মোবাইল ফোনে বিভিন্নজনের ছবি ও ভিডিও পাওয়া গেছে। এছাড়া বিকাশ ও নগদের মাধ্যমে টাকা হাতিয়ে নেওয়ার আলামতও মিলেছে।

রেজাউল মাসুদ বলেন, অনামিকা খানম চব্বিশ বছরের এক তরুণী। একসময় ড্যান্স ক্লাবের সদস্য ছিলেন, ডিজে পার্টিও করতেন তিনি।

অনামিকা বিভিন্ন ভুয়া পরিচয়ে ফেসবুক আইডি খুলে উচ্চবিত্ত পরিবারের সন্তান, বিশেষ প্রশাসনের বিভিন্ন কর্মকর্তাসহ রাজনীতিবিদদের টার্গেট করে বন্ধুত্ব করতেন। সেখানে নিজেকে সুন্দর ও আকর্ষণীয়ভাবে উপস্থাপন করতেন।

প্রেমের ফাঁদে ফেলে শিকারে পরিণত করতে খুব বেশি সময় নেন না তিনি। ভিডিও কলে নিয়মিত সংযুক্ত রাখেন শিকারকে। সুকৌশলে একান্ত মুহূর্তের ব্যক্তিগত ছবি ও ভিডিও ধারণ করে নেন অনামিকা।

এরপর একান্ত ব্যক্তিগত ছবি ও ভিডিওর মাধ্যমে ভয়-ভীতি দেখিয়ে নিয়মিত ব্ল্যাকমেইল করতে থাকেন। অনামিকার ফাঁদে পড়া লোকদের কাছে বিরাট অংকের চাঁদা দাবি করে এবং নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে টাকা দিতে অপারগতা প্রকাশ করলে এসব ছবি-ভিডিও তাদের আত্মীয়-স্বজনসহ সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ভাইরাল করার হুমকি দিতে থাকেন।

প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে বিভিন্ন প্রতারণাসহ সকল অপকর্মের কথা অকপটে স্বীকার করেছেন অনামিকা। মূলত নেশার টাকা যোগাড় করতেই এই অনৈতিক পথ বেছে নেন তিনি।

 







সর্বশেষ সংবাদ

সর্বাধিক পঠিত

এই ক্যাটেগরির আরো সংবাদ