আপনার ইবাদত কবুল হচ্ছে কি না বুঝবেন যেভাবে
|
আল্লাহ তায়ালা মানুষ এবং জিন জাতিকে সৃষ্টিই করেছেন তার ইবাদতের জন্য। পবিত্র কোরআনে বর্ণিত হয়েছে, ‘আমার এবাদত করার জন্যই আমি মানব ও জিন জাতি সৃষ্টি করেছি।’ (সুরা যারিয়াত : আয়াত ৫৬) কোরআনের নির্দেশনা মেনে প্রত্যেক মুমিন নিজের দুনিয়া ও আখেরাতের সফলতার জন্য কম-বেশি ইবাদত-বন্দেগি করে। মুমিনের সেই ইবাদত মহান আল্লাহর কাছে কবুল হচ্ছে কি না তা বোঝা কিছুটা কঠিন। তবে সালফে সালেহিন বা পূর্ববর্তী বুজুর্গ আলেমরা কিছু মানদণ্ড ঠিক করেছেন যার মাধ্যমে বোঝা সম্ভব যে আল্লাহ তায়ালা আমাদের ইবাদত কবুল করছেন কিনা । নিম্নে সেগুলো তুলে ধরা হলো— গুনাহে প্রত্যাবর্তন না করা পাশাপাশি যদি বিগত দিনের গুনাহগুলোর স্মরণ তাকে চিন্তিত ও লজ্জিত করে, আফসোসের তুফানে তার মনকে অশান্ত করে, তবে বুঝতে হবে তার আমল কবুল হচ্ছে। ‘মাদারিজুস সালেকিন’ নামক গ্রন্থে আল্লামা ইবনুল কায়্যিম (রহ.) বলেন, গুনাহের কল্পনা যদি কাউকে আনন্দ দেয় (সে গুনাহে লিপ্ত থাকতে পছন্দ করে এবং পাশাপাশি ইবাদতও করে) তবে সে ৪০ বছর ইবাদত করলেও তা কবুল হবে না। আমল কবুল না হওয়ার ভয় করা তাই দম্ভভরে তাঁর ইবাদত করা মূল্যহীন; বরং তাঁর ইবাদত করতে হবে অত্যন্ত যত্নসহকারে খুশুখুজুর সঙ্গে। আর পরিপূর্ণ খুশুখুজু আনতে হলে অবশ্যই ইবাদতটি সঠিক হচ্ছে কি না, তা আল্লাহর কাছে কবুল হবে কি না, এ ভয় অন্তরে থাকতে হবে। তবেই ইবাদত বিশুদ্ধ করার গুরুত্ব অন্তরে তৈরি হবে। আয়েশা (রা.) একবার নবীজি (সা.)-কে পবিত্র কোরআনের আয়াত—‘আর যারা দান করে এবং তাদের অন্তর ভীত কম্পিত।’ এর ব্যাপারে জিজ্ঞেস করে বলেন, এরা কি তারা, যারা মদ পান করে এবং চুরি করে? নবীজি (সা.) বলেন, ‘না, হে সিদ্দিক তনয়া, বরং এরা হলো ওই সব লোক, যারা সিয়াম পালন করে, সালাত (নামাজ) আদায় করে, সদকা দেয়। অথচ তাদের পক্ষ থেকে এসব কবুল না হওয়ার আশঙ্কা করে। এরাই তারা, যারা কল্যাণের দিকে দ্রুত ধাবমান এবং তার দিকে অগ্রগামী।’ (তিরমিজি, হাদিস : ৩১৭৫) নেক আমলের সুযোগ পাওয়া : মহান আল্লাহ যাদের প্রতি দয়া করেন, তারাই বেশি বেশি নেক-আমলে আত্মনিয়োগের সুযোগ পান। অতএব বেশি বেশি নেক আমলের সুযোগ পেলে বুঝতে হবে, আমলগুলো আল্লাহর কাছে কবুল হচ্ছে। নিজের আমলকে ছোট করে দেখা আবু হুরায়রা (রা.) বলেন, রাসুল (সা.) বলেছেন, ‘কস্মিনকালেও তোমাদের কাউকে নিজের আমল নাজাত দেবে না।’ তাঁরা বলেন, হে আল্লাহর রাসুল, আপনাকেও না? তিনি বলেন, ‘আমাকেও না।’ তবে আল্লাহ তাআলা আমাকে রহমত দিয়ে ঢেকে রেখেছেন। তোমরা যথারীতি আমল করে নৈকট্য লাভ করো। তোমরা সকালে, বিকেলে এবং রাতের শেষভাগে আল্লাহর ইবাদত করো। মধ্য পন্থা অবলম্বন করো। মধ্য পন্থা আমাদের লক্ষ্যে পৌঁছাবে।’ (বুখারি, হাদিস : ৬৪৬৩) ইবাদত কবুলের আশা করা নেককার ব্যক্তির সংশ্রব ভালো লাগা আমলের ধারাবাহিকতা বজায় রাখা
|