এলএনজি সরবরাহ শুরু
|
ফের এলএনজি সরবরাহ শুরু করেছে পেট্রোবাংলা। মহেশখালিতে থাকা সামিটের এলএনজি টার্মিনাল থেকে সোমবার (১৫ মে) সন্ধ্যায় ২৮০ মিলিয়ন ঘনফুট এলএনজি সরবরাহ করা হয়। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সোমবার সংবাদ সম্মেলনে এক প্রশ্নের উত্তরে বলেন, ঝড়ে যাতে টার্মিনালগুলো ক্ষতিগ্রস্ত না হয় এজন্য পাইপলাইন খুলে রেখে গভীর সমুদ্রে জাহাজগুলো পাঠানো হয়েছিল। এখন পানি স্থির হয়ে আসছে। ডুবুরিরা পাইপলাইন জুড়ে দিলেই সরবরাহ শুরু হবে। এজন্য বিশেষ দক্ষতাসম্পন্ন ডুবুরি দরকার বলেও জানান প্রধানমন্ত্রী। তিনি বলেন, পৃথিবীর সব ভাসমান টার্মিনাল এভাবেই রাখা হয়। প্রাকৃতিক দুর্যোগের কারণে এই সমস্যা সাময়িক বলে জানান প্রধানমন্ত্রী। এদিকে আরপিজিসিএল এর একজন কর্মকর্তা জানান, আপাতত একটি টার্মিনাল থেকে এলএনজি সরবরাহ শুরু হয়েছে। তবে এক্সিলারেট এনার্জির টার্মিনালটি গভীর সমুদ্র থেকে রওনা দিয়েছে। সেটি মঙ্গলবার (১৬ মে) মহেশখালি এসে পৌঁছাবে। পাইপলাইনের সঙ্গে জুড়ে দিলেই সেখান থেকেও এলএনজি সরবরাহ শুরু হবে। প্রসঙ্গত, ঘূর্ণিঝড় মোখার কারণে মহেশখালীর এলএনজি টার্মিনাল যাতে ক্ষতিগ্রস্ত না হয় সেজন্য গত শুক্রবার (১২ মে) থেকে এলএনজি সরবরাহ বন্ধ করে দেওয়া হয়। এতে করে সারাদেশে ৬৫০ মিলিয়ন ঘনফুট পর্যন্ত গ্যাসের ঘাটতি তৈরি হয়। দুর্যোগকালীন বিপুল পরিমাণ গ্যাসের ঘাটতি তৈরি হওয়ায় কিছু বিদ্যুৎকেন্দ্রও বন্ধ রাখা হয়। এতে সারাদেশে লোডশেডিং করে পরিস্থিতি মোকাবিলা করতে হচ্ছিলো। বিদ্যুৎ পরিস্থিতি: সোমবার দিনের বেলায় দেশে বিদ্যুতের সর্বোচ্চ চাহিদা ছিল ১২ হাজার ২০০ মেগাওয়াট। এর বিপরীতে উৎপাদন হয় ৯ হাজার ৯৮৪ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ। এর মধ্যে ঢাকার দুই বিতরণ কোম্পানি জানায়, ডেসকোর অধীন এলাকায় বিদ্যুতের চাহিদা ছিল ১ হাজার ১২০ মেগাওয়াট। তারা বিদ্যুৎ পেয়েছে ৮১২ মেগাওয়াট। এ হিসেবে লোডশেডিং হয়েছে ৩০৮ মেগাওয়াট। অন্যদিকে ডিপিডিসি জানায়, তাদের বিদ্যুতের চাহিদা ছিল ১ হাজার ৭১৪ মেগাওয়াট। এর বিপরীতে বিদ্যুৎ পেয়েছে ১ হাজার ২৬১ মেগাওয়াট। এদিকে গ্যাস ঘাটতির কারণে গত চার দিন ধরে চট্টগ্রামে গ্যাস সরবরাহ বন্ধ ছিল। আজ এলএনজি সরবরাহ শুরু হলে এই ঘাটতি কমে আসবে বলে আশা করছে কর্নফুলী গ্যাস ডিস্ট্রিবিউশন কোম্পানি। সরকারের তরফ থেকে গ্যাস এবং বিদ্যুতের সাময়িক সংকটের জন্য দুঃখ প্রকাশ করে দ্রুত পরিস্থিতি স্বাভাবিক করার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। প্রসঙ্গত, দেশে দুটি এলএনজি টার্মিনাল থেকে প্রতিদিন ৬৫০ মিলিয়ন ঘনফুটের মতো এলএনজি সরবরাহ করা হয়। এর বাইরে দেশে আরও দুই হাজার মিলিয়ন ঘনফুট দেশীয় গ্যাস সরবরাহ করা হয়। সেই হিসেবে দেশে এলএনজি সরবরাহ বন্ধ হলে দৈনিক অন্তত এক তৃতীয়াংশ গ্যাস সংকট সৃষ্টি হয়। ঝড়ের কারণে এলএনজি সরবরাহ বন্ধ হলেও দেশের অন্য ব্যবহার আগের মতোই স্বাভাবিক থাকায় সংকট দেখা দেয়।
|