বুধবার ৩০ অক্টোবর ২০২৪ ১৪ কার্তিক ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

খামারগুলোতে জমে উঠেছে কেনাবেচা
প্রকাশ: বৃহস্পতিবার, ২২ জুন ২০২৩, ১০:২২ পূর্বাহ্ণ

ঈদুল আজহাকে সামনে রেখে দিন গুনছেন কোরবানিদাতারা। এরই মধ্যে ঢাকায় পশুর হাট ঘটা করে শুরু করে না হলেও ইতিমধ্যে কোরবানির পশু কিনে রেখেছেন অনেকেই। হাট ছাড়া কীভাবে পশু কিনলেন তার উত্তর মিলবে ঢাকার অদূরেই কেরানীগঞ্জ বা মোহাম্মদপুর বেড়িবাঁধ এলাকায় গেলে। এসব জায়গায় গড়ে ওঠা ছোটোবড় খামারগুলোই যেন এখন একেকটা কোরবানির পশুর হাট। এক মাস আগে থেকেই এসব খামারে চলছে কোরবানির পশুর জমজমাট বেচাকেনা। রাজধানীর মোহাম্মদপুর, কেরানীগঞ্জ, ডেমরাসহ পার্শ্ববর্তী এলাকার খামারগুলোতে ঘুরে এমন চিত্র দেখা গেছে।

গত কয়েকদিনে কেরানীগঞ্জ এবং মোহাম্মদপুরে অন্তত ১০টি খামার ঘুরে পশু কেনাবেচা হতে দেখা গেছে। খামারিরা জানিয়েছেন, তারা আট-দশ বছর ধরেই পশুপালনের সঙ্গে যুক্ত। বেশির ভাগই ঢাকায় নিজস্ব খামারে পশু লালনপালন করেন।

খামারিরা জানিয়েছেন, এরই মধ্যে তাদের ৮০ ভাগ পশু বিক্রি হয়ে গেছে। এতে তারা যেমন বেশ খুশি, তেমনি ক্রেতারাও আছেন স্বাচ্ছন্দ্যে।

সরেজমিনে মোহাম্মদপুরে সাদিক অ্যাগ্রোতে দেখা যায় সেখানে ক্রেতারা আসছেন প্রতিনিয়ত। গরু দেখছেন, দরদাম করছেন। পছন্দ হলে কিনেও নিচ্ছেন। খামারটির স্বত্ত্বাধিকারী ইমরান হোসেন  জানান, প্রায় ১০ বছর ধরে আমাদের এই খামার চলছে। এখানে যারা পশু কিনতে আসেন তাদের সঙ্গে আমাদের পারিবারিক সম্পর্কের মতো হয়ে গেছে। এখান থেকে যারা একবার কোরবানির পশু কেনেন, তারা আর কখনোই অন্য কোনও হাটে যান না। ঢাকার অনেক হাটের চেয়ে এ খামারে বেশি ক্রেতা আসেন বলেও দাবি করেন তিনি।

ক্রেতাদের কী ধরনের সুবিধা দেওয়ার কারণে সব সময় এখান থেকেই পশু কিনছেন তা জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘এখান থেকে কেউ গরু কিনলে ঈদ পর্যন্ত আমরা বিনামূল্যে যত্ন নেই। ঈদের আগে কোনও ডেলিভারি চার্জ ছাড়াই ক্রেতার বাসায় আমরা পৌঁছে দিই। প্রয়োজনে সঙ্গে আমরা এক-দুই দিনের খাবারও দিয়ে দিই। এ ছাড়া অনেক ক্রেতা আমাদের কাছে দুই-তিন মাস আগেই তাদের চাহিদা ও সামর্থ্য অনুযায়ী গরুর অর্ডার দিয়ে যান।’

নিরালা ক্যাটেল ফার্ম নামে মোহাম্মদপুর বেড়িবাঁধে আরেকটি খামারে গিয়েও দেখা গেছে, ক্রেতাদের সমাগম। অনেকে পশু কিনে নিয়ে যাচ্ছেন। তবে অধিকাংশই বুকিং করে রেখে যাচ্ছেন খামারেই।

খামারের কর্মী আজহারুল ইসলাম জানালেন, এই ফার্মে গরু ছাগল এবং ভেড়া মিলে ৪শ’র মতো পশু আছে। ক্রেতারা যেহেতু কেনার পর আমাদের কাছেই রেখে যেতে পারছেন, এ কারণে তারা হাট বাদ দিয়ে ফার্ম থেকে পশু কিনেই স্বাচ্ছন্দ্য বোধ করছেন।

কেরানীগঞ্জে ফারিহা মিনি ফার্ম নামে একটি খামারে গরু কিনছিলেন লালবাগ এলাকার বাসিন্দা রফিকুল ইসলাম। তিনি জানালেন, একজনের কাছে শুনে খামারে গরু দেখতে এসেছেন। এসেই পছন্দ হওয়াতে দুটি গরু কিনে ফেলেছেন। একটির দাম ২ লাখ ৮০ হাজার টাকা, আরেকটি কিনেছেন ১ লাখ ৫০ হাজার টাকায়।

হাটের বদলে খামার থেকে গরু কেনার কারণ জানতে চাইলে এই ক্রেতা বলেন, সব সময় হাট থেকেই গরু কিনি, কিন্তু খামার থেকে কেনা অপেক্ষাকৃত স্বস্তির মনে হলো। এখানে একটা নিশ্চয়তাও পাওয়া যায়। যেমন-কিনে নেওয়া গরু অসুস্থ হয়ে পড়লে সেটি আবার বদলে দেওয়ার কথা বলেছেন খামারের ব্যবস্থাপক। হাটে তো এই সুবিধা পাওয়া যাবে না। আর ঈদের আগে আগে খামারি নিজেই গরু বাসায় পৌঁছে দেবেন।

খামারীদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, এবারের ঈদকে সামনে রেখে যে পরিমান পশু প্রস্তুত করেছেন, তার প্রায় ৮০ ভাগই ইতিমধ্যে বিক্রি হয়ে গেছে। ঈদের এক সপ্তাহ আগেই সব পশু বিক্রি হয়ে যাবে বলেও জানান তারা।

তিন্নী ডেইরি অ্যান্ড ক্যাটেল ফার্মের স্বত্ত্বাধিকারী হাজি আবদুর রহমান জানান, তিনি সারা বছর নিজস্ব খামারে দেশি-বিদেশি বিভিন্ন জাতের গরু-ছাগল পালন করে থাকেন। এবারের কোরবানির জন্য ১০০টি গরু এবং ৩০টি ছাগল প্রস্তুত করেছেন তিনি। এর মধ্যে ৪০টি গরু এবং পাঁচটি ছাগল বাদে বাকি সব পশু ইতিমধ্যে বিক্রিও হয়ে গেছে।

 







সর্বশেষ সংবাদ

সর্বাধিক পঠিত

এই ক্যাটেগরির আরো সংবাদ