মঙ্গলবার ২২ অক্টোবর ২০২৪ ৬ কার্তিক ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

গোয়াইনঘাটে বালু লুটপাট ও চাঁদাবাজি বন্ধে নিরব প্রশাসন
প্রকাশ: সোমবার, ২৮ আগস্ট ২০২৩, ০৪:১৯ অপরাহ্ণ

গোয়াইনঘাট প্রতিনিধিঃ  সিলেটের গোয়াইনঘাট উপজেলা অবৈধ বালু উত্তোলন ও চাঁদাবাজি বন্ধে রহস্যজনক কারনে নিরব ভূমিকা পালন করছে প্রশাসন। যার ফলে বেপরোয়া হয়ে উঠেছেন স্থানীয় চাঁদাবাজ চক্রের সদস্যরা। উপজেলার পরিবেশ সঙ্কটাপন্ন এলাকা থেকে বালু লুটপাট ও চাঁদাবাজি বন্ধের দাবি জানিয়েছেন স্থানীয়রা। একই সঙ্গে বালু লুটপাটকারীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহনের দাবি জানানো হয়েছে। তবে কিছৃুতেই বন্ধ হচ্ছে বালু খেকোদের ধ্বংস লীলা।

স্থানীয়রা জানান- গোয়াইনঘাট উপজেলার পরিবেশ সঙ্কটাপন্ন এলাকা থেকে লুটপাট করছে বালু ও পাথরখেকো ডৌবাড়ি এলাকার লামা দোমকা গ্রামের বাসিন্দা সুভাস দাস, লেঙ্গুরা গ্রামের মুজিবুর রহমান, মামার দোকান মেলার মাঠের বাসিন্দা ইমরান হোসেন সুমন, জাফলং নয়াবস্তি গ্রামের বাসিন্দা আলীম উদ্দিন ও বিশ্বনাথের ফয়জুল ইসলাম। তারা মন্ত্রীর দোহাই দিয়ে প্রশাসনকে ম্যানেজ করে এই লুটপাট চালাচ্ছে। প্রায় তিন মাস আগে তারা এবার যখন উপজেলায় মিশন শুরু করে তখন নতুন করে সিন্ডিকেট গড়ে তোলে। তারা নিষেধাজ্ঞা এলাকা থেকে বালু লুটপাট করছে। প্রতিদিন তারা ২০-২৫ লাখ টাকার বালু লুটপাট করেই চলেছে। আর বালু লুটপাটে তারা অবৈধ বোমা মেশিনও ব্যবহার করছে।

স্থানীয়রা বলেন, বালু লুটপাটের কারনে পূর্ব জাফলংয়ের পিয়াইনের তীরবর্তী কান্দুবস্তি, নয়াবস্তি এলাকার মানুষের ঘুম হারাম হয়ে গেছে। বালু উত্তোলনে নিয়োজিত বোমা ও ড্রেজার মেশিনের শব্দে গোটা এলাকায় শব্দ দুষন হচ্ছে। ইতিমধ্যে জাফলংয়ের পিয়াইন নদী বাগান এলাকায় অবাধে বালু উত্তোলনের ফলে জাফলং চা বাগান হুমকির পড়ে পড়েছে। জাফলং কান্দুবস্তু ও নয়াবস্তি এলাকা পড়েছে হুমকির মুখে।

ওই দুই গ্রামের বাসিন্দারা ঢল থেকে রক্ষার জন্য যে বাধ দিয়েছিলেন সেটিও বালুখেকোরা লুটেপুটে খেয়ে নিয়ে নিয়েছে। এই দুই গ্রামের অনেক বসতি ও নদী তীরবর্তী জমি ইতিমধ্যে নদী ভাঙনের মুখে পড়েছে। যেকোনো সময় দুই গ্রামের মানুষ ভিটে-মাটিহীন হয়ে যাওয়ার আশঙ্কা রয়েছে। এছাড়া- স্থানীয় সাংসদ, প্রবাসী কল্যান ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান মন্ত্রনালয়ের মাননীয় মন্ত্রী ইমরান আহমদের একান্ত প্রচেষ্ঠায় শত কোটি টাকা ব্যায়ে গোয়াইনঘাটবাসীর স্বপ্নের সেতু জাফলং ব্রিজও হুমকির মুখে রয়েছে। এই ব্রিজের পাদদেশ থেকেও অবাধে বালু লুটপাট করা হচ্ছে।

এদিকে, পশ্চিম জাফলং ইউনিয়নের দেড়িখা বাগাবন্দ গ্রামের বাসিন্দা নুর গনি বলেন, মাস খানেক থেকে পিয়াইন নদী থেকে অবৈধ ভাবে ড্রেজার মেশিন দিয়ে বালু উত্তোলন করে লাখ লাখ টাকা হাতিয়ে নিচ্ছে স্থানীয় একটি সন্ত্রাসী চক্র। এই চক্রের প্রধান হলেন, পশ্চিম জাফলং ইউনিয়নের সুলতানপুর গ্রামের বাসিন্দা যুবলীগ নেতা দেলোয়ার হোসেন কিবরিয়া। তার বিরুদ্ধে এলাকায় নারী ধর্ষণ ও সন্ত্রাসী কর্মকান্ডের একাধিক অভিযোগ রয়েছে।

তার কোন ব্যবসা না থাকলেও সে চাঁদাবাজি করাই হলো তার একমাত্র পুঁজি। দেলোয়ার স্থানীয় মনতরতল বাজার সমিতির সভাপতি হওয়ায় সে প্রতিদিন রাতে বাজারের কার্যালয়ে মাদক সেবন সহ সকল ধরণের অসামাজিকতা চালিয়ে যাচ্ছে। তার সাথে রয়েছে দেড়িখা বাগাবন্দ গ্রামের চিহিৃত চাঁদাবাজ ও নামধারী যুবলীগ নেতা খায়রুল ও তার ফজলু, এবং ইসলামাবাদ গ্রামের যুবদল নেতা নাজমুল ইসলাম রিপন, লেছু মিয়া, শামসু মিয়া। এরমধ্যে দেলোয়ার, খায়রুল ও নাজমুলই হলেন এই চক্রের নেতৃত্বদাতা।

গোয়াইনঘাট উপজেলার এই অসহায় মানুষের বাড়ি-ঘর রক্ষায় অবৈধ বালু উত্তোলন ও চাঁদাবাজি বন্ধে প্রশাসনের উর্দ্ধতন কর্তৃপক্ষের নিকট হস্থক্ষেপ কামনা করছেন স্থানীয়রা।







সর্বশেষ সংবাদ

সর্বাধিক পঠিত

এই ক্যাটেগরির আরো সংবাদ