মঙ্গলবার ১১ ফেব্রুয়ারি ২০২৫ ২৮ মাঘ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

হাজীগঞ্জে এক প্রবাসীর স্ত্রী সুন্দরী হওয়ায় বখাটেদের উৎপাতে ভিটেমাটি হারানোর শঙ্কায়
প্রকাশ: বুধবার, ২৯ জানুয়ারি ২০২৫, ১১:৪৬ পূর্বাহ্ণ

নিজস্ব প্রতিনিধি: শরীরের গঠন প্রণালী ও চেহারা সুন্দরের কারনে বখাটেদের নিয়মিত উৎপাতে এখন ভিটেমাটি হারানোর শঙ্কায় রয়েছেন চাঁদপুরের হাজীগঞ্জের এক প্রবাসীর স্ত্রী। ঘটনাটি নিয়ে ইতিমধ্যেই পরিবারের পরামর্শে আইনের দারস্থ হয়েছেন ওই ভুক্তভোগী নারী।

২৯ জানুয়ারি বুধবার বিকালে গণমাধ্যমকর্মীদের কাছে এসব কথাই তুলে ধরেন ভুক্তভোগী নারী। এটি হাজীগঞ্জের ৫নং সদর ইউনিয়নের ৮নং ওয়ার্ডের উচঙ্গা গ্রামের ঘটনা।

সালমা বেগম নামের ওই নারী বলেন, কাজের সুবাদে স্বামী প্রবাসে থাকায় আমি বাড়ীতে ছোট ছোট ৩ সন্তানকে নিয়ে একা বসবাস করছি। পরিবেশ একটু নিরীবিলি হওয়ায় স্থানীয় কতিপয় বখাটেরা আমাকে বাড়ীতে একা দেখে নানা সময়ে কুপ্রস্তাব দেয়। এখন তাদের কু-প্রস্তাবে সাড়া না দেয়ায় আমাকে ধর্ষণচেষ্টা করা হয়। আমি এর প্রতিবাদ করায় আমার বিরুদ্ধে নানা কুৎসা রটনার চেষ্টাসহ এখন ভিটেমাটি থেকে উৎখাতের চেষ্টা করছে একটি গং। পরে আমি আমার পরিবারের পরামর্শে আদালতে আইনী ব্যবস্থা গ্রহণ করেছি। কিন্তু এরপর বখাটেদের উৎপাত যেনো আরও বেড়ে গেছে। আমি এর বিচার চাই।

সালমার শশুড় শাহ-আলম বলেন, বৌমা বাড়ীতে তার সন্তানদের নিয়ে একা থাকে। কয়েক বছর আগে এই জমিটি ক্রয় করে আমার ছেলে লোকমান হোসেন। এই জমিটি কেনার পর চুক্তিপত্র অনুযায়ী কিছু টাকা এখনো দেয়া বাকি রয়েছে। তবে জমি রেজিষ্ট্রি না হওয়ায় আমরা বাকি টাকা এখনো পরিশোধ করিনি। আর সেই সুযোগকে কাজে লাগিয়ে স্থানীয় বখাটে ফারুক, হাসান, বাহার, নজরুল এরা বিভিন্ন সময় আমার পুত্রবধুকে কু-প্রস্তাবসহ উত্ত্যক্ত করে। আমরা এখন এর সুষ্ঠু সমাধানে প্রশাসনের হস্তক্ষেপ চাই।

 

 

কাতারে থেকে মুঠোফোনে ওই নারীর স্বামী লোকমান হোসেন বলেন: শাহজাহান নামের এক প্রভাবশালী লোক জমিটি বিক্রি করে ফয়েজ ঢালীর কাছে। পরে ফয়েজ ঢালী বিক্রি করে আমার কাছে।নালার ওই জমিতে আমি লাখ লাখ টাকা খরছ করে মাটির বাঁধ দিয়ে বালু ফেলে ভরাট করে এখন পাকা দালান নির্মাণ করি। এখন জমি রেজিষ্ট্রি করতে গিয়ে শাহজাহানের ইশারায় নানা তালবাহানা শুরু কর হয়। এখন আমাদের কাছে স্টাম্পে টাকা নেয়ার প্রমাণও রয়েছে। এখন আমি বাহিরে চলে আসায় জমি ছেড়ে দিতে আমার নিরীহ স্ত্রীর সাথে ঝামেলা শুরু করেছে বখাটেরা। আমরা এর থেকে পরিত্রাণ পেতে আইনের প্রতি সবাই জোড় দাবী জানাচ্ছি।

জানা যায়, সালমা বেগম ও লোকমান হোসেন দম্পতির সংসারে শানজিদা আক্তার, মোহাম্মদ শান্ত ও মোহাম্মদ শামীম নামে ছোট ছোট স্কুল পড়ায় ৩ সন্তান রয়েছে। বাড়ীটি অনেকটা অরিক্ষিত এবং এর চারপাশ অনেকটা নিরিবিলি।

 

 

অভিযোগ প্রসঙ্গে ফারুক বলেন- আমি একজন সামাজিক ও ভালো মানুষ। দিন মজুরি কাজ কর্ম করি। এলাকার প্রতিবেশি হিসেবে ওই নারীর ওখান দিয়ে যাওয়া আসা। ওই নারীই খারাপ তাই তিনি ভুলভাল কথা ছড়াচ্ছে।একই কথা বললেন নজরুলসহ হাসান ও বাহার। তারা বলেন, ওই নারী যে খারাপ এটা এলাকার সবাই জেনে গেছে। তাই এখন আবোল তাবোল কথা বলতেছে। সমাজের সবাই জানে আমরা খুব ভালো মানুষ। ওই নারী এলাকায় নতুন এসে অহেতুক মিথ্যা বানোয়াট কথা বলে আমাদের হয়রানি করতে উঠে পড়ে লাগছে।

এদিকে অভিযোগ প্রসঙ্গে যোগাযোগ করা হলে দায় এড়ানো কথা বলেন স্থানীয় শাহজাহান। তিনি বলেন, আমি ওই পরিবারের কাছে কোন জমি বিক্রি করিনি। আমি অন্য এক লোকের কাছে জমি বিক্রির চুক্তি করি। কাজেই ওনাদের সাথে আমার কোন লেনদেন নেই। উল্টো জমিতে ভেকু দিয়ে মাটি ভরাট ও বালু ফেলাসহ ভবন নির্মাণে আমি তাদের এগুলো না করতে নিষেধ করি। এখন এলাকার ফারুকসহ অন্যরা যদি ওই নারীর সাথে কোন ঝামেলা বাঁধায় তাহলে গণমান্যদের নিয়ে আমরা এটা সমাধান করে দিবো। আমার ইশারায় বখাটেদের উৎপাত কথাটি সত্য নয়।

এ বিষয়ে হাজীগঞ্জের ৫নং সদর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান সুমন প্রধানিয়াকে অবগত করা হলে তিনি বলেন, ইভটেজিংসহ বখাটের উৎপাতে আমরা জিরো টলারেন্স। জমিসহ অন্য সমস্যা থাকলে ওনারা আমার কাছে এলে আমি ওনাদের নিরাপত্তা নিশ্চিতে পাশে থাকবো।

এ বিষয়ে চাঁদপুরের হাজীগঞ্জ থানার ওসি মো: মহিউদ্দিন ফারুককে অবগত করা হলে তিনি বলেন, বখাটের উৎপাতসহ মাদকের বিরুদ্ধে আমাদের অভিযান অব্যাহত রয়েছে। আমরা ওই নারীর বিষয়টি গুরুত্বসহকারে দেখে আইনী সহায়তা দেবো।







সর্বশেষ সংবাদ

সর্বাধিক পঠিত

এই ক্যাটেগরির আরো সংবাদ