ট্রলারে হাত-পা বাঁধা ১০ জনের লাশ উদ্ধার
|
কক্সবাজার শহরের নাজিরারটেক সমুদ্র উপকূলে ভাসমান একটিউট্রলার থেকে ১০ জনের অর্ধগলিত লাশ উদ্ধার করেছে পুলিশ ও ফায়ার সার্ভিস। এটিকে পরিকল্পিত হত্যাকাণ্ড বলছে পুলিশ। এরই মধ্যে উদ্ধার করা লাশগুলোতে পচন ধরেছে। তাদের হাত-পা রশি দিয়ে বাঁধা ছিল। কারও কারও শরীরে আঘাতের চিহ্ন রয়েছে। এখনও পরিচয় নিশ্চিত হওয়া যায়নি। তবে ঘটনার ধরন দেখে পুলিশ বলছে, এটি দুর্ঘটনা নয়, হত্যাকাণ্ড। পরিকল্পিতভাবে হত্যা করা হয়েছে। ঘটনাস্থলে পাওয়া তথ্য-উপাত্ত নিয়ে তদন্ত করছে পুলিশ। এটিকে পরিকল্পিত হত্যাকাণ্ড উল্লেখ করে কক্সবাজারের পুলিশ সুপার মো. মাহফুজুল ইসলাম বলেন, ‘এতে কোনও সন্দেহ নেই। কারণ তাদের হাত-পা রশি দিয়ে বাঁধা ছিল, শরীরে আঘাতের চিহ্ন আছে। আমাদের ধারণা, জলদস্যুরা গভীর সাগরে তাদের হত্যা করেছে। পরে ট্রলারে লাশ রেখে দরজা লাগিয়ে দেয়।’ তিনি বলেন, ‘সব কয়টি লাশ বিকৃত হয়ে গেছে। এ জন্য পরিচয় শনাক্ত করতে দেরি হচ্ছে। পরিচয় শনাক্তে সিআইডি ও পিবিআইয়ের ক্রাইম সিন টিমকে খবর দেওয়া হয়েছে। আশা করছি দ্রুত পরিচয় শনাক্ত করতে পারবো। একইসঙ্গে ঘটনায় জড়িতদের চিহ্নিত করতে পারবো। ঘটনার তদন্ত শুরু করেছি আমরা।’ পুলিশ সুপার বলেন, ‘স্থানীয় জেলেদের সঙ্গে কথা বলে জেনেছি, ১০-১২ দিন আগে মহেশখালী থেকে একটি ট্রলার নিয়ে গভীর সাগরে মাছ ধরতে গিয়ে নিখোঁজ হয়েছিলেন কয়েকজন জেলে। হয়তো জলদস্যুরা ওই ট্রলারের মাছ ও জাল লুট করে জেলেদের হাত-পা বেঁধে হত্যা করেছে। পরে লাশ ভেতরে রেখে ট্রলারটি সাগরে ডুবিয়ে দেওয়ার চেষ্টা করেছে। কিন্তু ট্রলারটি ডুবে যায়নি। রশি দিয়ে ট্রলারটি টেনে মহেশখালীর সোনাদিয়া চ্যানেলে নিয়ে আসেন স্থানীয় জেলেরা। খবর পেয়ে দুপুর ২টার দিকে ঘটনাস্থলে গিয়ে ১০ জনের লাশ উদ্ধার করে পুলিশ ও ফায়ার সার্ভিস।’ নাজিরারটেক উপকূলের কয়েকজন জেলে জানিয়েছেন, স্থানীয় জেলেরা গভীর সমুদ্র থেকে মাছ শিকার শেষে কূলে আসার সময় ওই ট্রলারটি ভাসতে দেখেন। পরে তারা ট্রলারটি নাজিরারটেক উপকূলের মোহনায় নিয়ে আসেন। এ সময় ট্রলারের ভেতর থেকে দুর্গন্ধ বের হলে ৯৯৯ নম্বরে ফোন দেন। খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে গিয়ে একে একে ১০ জনের লাশ উদ্ধার করে পুলিশ ও ফায়ার সার্ভিস। ফায়ার সার্ভিসের কক্সবাজার স্টেশন অফিসার খান খলিলুর রহমান বলেন, ‘লাশগুলো বিকৃত হয়ে গেছে। প্রত্যেকের হাত-পা বাঁধা ছিল। নৃশংসভাবে হত্যা করা হয়েছে। লাশ দেখে বোঝা যাচ্ছে ১০-১২ দিন আগে হত্যাকাণ্ড ঘটেছে।’ সদর মডেল থানার ওসি মো. রফিকুল ইসলাম বলেন, ‘লাশগুলো ময়নাতদন্তের জন্য সদর হাসপাতালের মর্গে পাঠানো হয়েছে। ট্রলার ও নিহত জেলেদের পরিচয় শনাক্তের চেষ্টা চলছে।’ তবে স্থানীয় জেলেদের দাবি, কিছু দিন আগে কক্সবাজার সমুদ্র উপকূলে একটি মাছ ধরা ট্রলারে হামলা চালায় একদল দস্যু। তখন তারা ট্রলারের মাছ ও জাল লুট করে জেলেদের হাত-পা বেঁধে হত্যা করেছে। নিহতরা মহেশখালী, চকরিয়া, কুতুবদিয়া কিংবা আশপাশের এলাকার বাসিন্দা হতে পারেন। তবে এখনও ট্রলারটির মালিকের খোঁজ পাওয়া যায়নি।
|