তারেকের বক্তব্য প্রচারে নিষেধাজ্ঞা নিয়ে শুনানি আজ
|
প্রিন্ট, ইলেকট্রনিক ও অনলাইন গণমাধ্যমসহ সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের বক্তব্য প্রচার বন্ধের বিষয়ে রুল প্রস্তুত করা হবে কি না, এ বিষয়ে শুনানির জন্য আজ দিন নির্ধারিত রয়েছে। বৃহস্পতিবার (১০ আগস্ট) হাইকোর্টের বিচারপতি মো. খসরুজ্জামান ও খায়রুল আলমের সমন্বয়ে গঠিত বেঞ্চ এই দিন নির্ধারিত রয়েছে। এর আগে গত মঙ্গলবার (৮ আগস্ট) হাইকোর্টের সংশ্লিষ্ট একই বেঞ্চে শুনানি ও আদেশের জন্য এ দিন ঠিক করেন। এদিন বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের কাছে নতুন করে নোটিশ ইস্যু করতে হবে কি না, বিষয়টি সুরাহা হতে পারে বলে জানিয়েছেন আইনজীবীরা। আদালতে সেদিন রিটের রুলের পক্ষে শুনানিতে ছিলেন সাবেক মন্ত্রী অ্যাডভোকেট মো. কামরুল ইসলাম, অ্যাডভোকেট সানজিদা খানম ও অ্যাডভোকেট নাসরিন সিদ্দিকা লিনা। এছাড়া আওয়ামী লীগের অন্য আইনজীবীরা উপস্থিত ছিলেন। অন্যদিকে বিএনপির পক্ষ থেকে ছিলেন বিএনপির কেন্দ্রীয় কমিটির আইনবিষয়ক সম্পাদক ও জাতীয়তাবাদী আইনজীবী ফোরামের মহাসচিব ব্যারিস্টার কায়সার কামাল, সুপ্রিম কোর্ট বারের সাবেক সম্পাদক ব্যারিস্টার এএম মাহবুব উদ্দিন খোকন, ব্যারিস্টার বদরুদ্দোজা বাদল, ব্যারিস্টার রুহুল কুদ্দুস কাজল ও জাতীয়তাবাদী আইনজীবী ফোরাম সুপ্রিম কোর্ট ইউনিটের সাধারণ সম্পাদক অ্যাডভোকেট মো. কামরুল ইসলাম সজলসহ আরও অনেক আইনজীবী। এসময় হাইকোর্ট জানতে চান, তারেক রহমানকে তো নোটিশ দেওয়া হয়নি। কীভাবে রুল শুনানি হবে? জবাবে রিটকারী আইনজীবী মো. কামরুল ইসলাম বলেন, উনাকে কোনো ঠিকানায় পাওয়া যায়নি। তবে এর তীব্র বিরোধিতা করেন বিএনপিপন্থি আইনজীবীরা। এক পর্যায়ে আওয়ামীপন্থি এক আইনজীবী তারেক রহমানকে পলাতক বলার সঙ্গে সঙ্গেই এজলাসে হট্টগোল শুরু হয়। চলে বাগবিতণ্ডা। পরে হাইকোর্ট বলেন, রুলস অনুযায়ী অবশ্যই নোটিশ দিতে হবে তারেক রহমানকে। তবে সেটা কোন প্রক্রিয়ায় তার উপায় খুঁজতে হবে। বিকল্প পদ্ধতি বের করতে হবে। আদালত বলেন, এ বিষয়ে আদেশ দেওয়া হবে বৃহস্পতিবার। এসময় বিএনপির আইনজীবীদের উদ্দেশে হাইকোর্ট বলেন, আপনারা যেহেতু এ মামলার শুনানিতে এসেছেন, এক অর্থে তো আপনারা নোটিশ পেয়ে গেছেন। জবাবে বিএনপিপন্থি আইনজীবী ব্যারিস্টার কায়সার কামাল বলেন, আমরা ন্যায়বিচারের জন্য এখানে এসেছি। নোটিশ পেয়ে নয়। এর আগে প্রিন্ট, ইলেকট্রনিক ও অনলাইন গণমাধ্যমসহ সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের বক্তব্য প্রচার বন্ধের বিষয়ে জারি করা রুল শুনবেন বলেছিলেন হাইকোর্ট। এ কারণে রুল প্রস্তুত হওয়ার পর আবেদনকারীদের আসতে বলেন হাইকোর্ট। গত বৃহস্পতিবার (৩ আগস্ট) বিচারপতি মো. খসরুজ্জামান ও খায়রুল আলমের সমন্বয়ে গঠিত বেঞ্চ এ নির্দেশনা দেন। রিটকারী আইনজীবীরা গণমাধ্যম, ইউটিউব, ফেসবুক, টুইটারসহ সব মাধ্যমে তারেক রহমানের বক্তব্য প্রচার বন্ধ সংক্রান্ত রিটের বিষয়ে জারি করা রুল শুনানির জন্য সেদিন হাইকোর্টের সংশ্লিষ্ট বেঞ্চে প্রার্থনা জানান। তখন হাইকোর্ট বলেন, রুল তো এখনো প্রস্তুত হয়নি। আগে রুল প্রস্তুত হোক, তখন আদালতে আসেন। তারই ধারাবাহিকতায় সেদিন বিষয়টি শুনানিতে ওঠে। আইনের দৃষ্টিতে পলাতক থাকা অবস্থায় বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের বক্তব্য বা বিবৃতি সব ধরনের গণমাধ্যমে প্রচার ও প্রকাশ নিষিদ্ধ করতে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিতে নির্দেশ দিয়েছিলেন হাইকোর্ট। এক রিট আবেদনের প্রাথমিক শুনানি নিয়ে ২০১৫ সালের ৭ জানুয়ারি বিচারপতি কাজী রেজা-উল হক ও বিচারপতি আবু তাহের মো. সাইফুর রহমানের সমন্বয়ে গঠিত বেঞ্চ রুলসহ অর্ন্তর্বতীকালীন এ আদেশ দিয়েছিলেন। একই সঙ্গে তারেক রহমানের বিদেশের অবস্থা সম্পর্কে জানাতে পররাষ্ট্র সচিবকে নির্দেশ দেওয়া হয়েছিল। তার পাসপোর্টের মেয়াদের বিষয়ে পুলিশের মহাপরিদর্শককে (আইজিপি) একটি প্রতিবেদন দিতে নির্দেশ দেওয়া হয়। ওই সময় সুপ্রিম কোর্টের অ্যাডভোকেট (বর্তমানে মন্ত্রী) শ ম রেজাউল করিম বলেছিলেন, আইনের দৃষ্টিতে পলাতক থাকা অবস্থায় তারেক রহমানের কোনো বক্তব্য-বিবৃতি প্রচার বা প্রকাশ নিষিদ্ধ করতে ব্যবস্থা নেওয়ার নির্দেশ দিয়েছেন হাইকোর্ট। ফলে সংবাদমাধ্যম ও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমসহ অনলাইনে তারেক রহমানের কোনো ধরনের বক্তব্য প্রচার করা যাবে না। তারই ধারাবাহিকতায় এটি আবার শুনানির উদ্যোগ নেন আওয়ামী লীগের আইনজীবীরা।
|