তৃতীয় দিনেও রাজধানীতে ঈদের আমেজ
|
তৃতীয় দিনেও রাজধানীতে ঈদের আমেজ ছিল জমজমাট। নতুন পোশাক পরে শিশুরা বাবা-মায়ের সঙ্গে, আর তরুণ-তরুণীরা বন্ধুবান্ধবের সঙ্গে ঘুরতে বের হয়েছেন। টানা ৫ দিনের ছুটি শেষে সোমবার (২৪ এপ্রিল) সরকারি-বেসরকারি অফিস খুলেছে। অনেকেই কাজে যোগ দিয়েছেন। তবু রাজধানীতে রয়ে গেছে ঈদের আমেজ। সোমবার রাজধানীর ধানমন্ডি লেক ও রবীন্দ্র সরোবর এলাকায় দেখা যায় ঈদকে কেন্দ্র করে নগরবাসীর ঘুরে বেড়ানের দৃশ্য। দুপুর থেকে বিকাল গড়াতেই বাড়তে থাকে মানুষের উপস্থিতি। মিরপুরের বাসিন্দা আহসান তার ছেলে আর মাকে নিয়ে ঘুরতে এসেছেন ধানমন্ডির রবীন্দ্র সরোবরে। এ সময় তিনি নিজের স্মৃতির কথা মনে করে বলেন, ‘আমার বড় হওয়া এই ধানমন্ডিতে। বাবার চাকরির সুবাদে আমরা জিগাতলার সরকারি কোয়ার্টারে থাকতাম। বাবার অবসর প্রাপ্তির পর আমরা মিরপুর চলে যাই ১০ বছর হলো। কিন্তু আমার জীবনের সবচেয়ে সুন্দর সময়টা কেটেছে এই ধানমন্ডিতে। তরুণ সময়ে এই রবীন্দ্র সরোবরে অনেক আড্ডা দিয়েছি। তাই এই জায়গার প্রতি আমার আলাদা একটা অনুভূতি কাজ করে। আজকে ছেলেকে নিয়ে তাই এখানেই ঘুরতে এসেছি।’ বাবা আর দাদুর সঙ্গে ঘুরতে আসা রুজাইন আহসান বলে, আমরা আজকে আহসান মঞ্জিল ঘুরে তারপর রবীন্দ্র সরোবরে বেড়াতে এসেছি। মায়ের অফিস খুলে গেছে, তাই মা আসতে পারেনি। আহসান মঞ্জিল গিয়ে অনেক কিছু দেখেছি। ওখানে ওদের (নবাবদের) ডাইনিং টেবিলটা আমার সবচেয়ে ভালো লেগেছে। ওদের খাবারের প্লেটে ছিদ্র ছিল। ওই ছিদ্র দিয়ে গরম পানি ঢুকিয়ে রাখলে খাবার গরম থাকতো। এখন আমরা রবীন্দ্র সরোবরে এসে রেস্ট নিচ্ছি।’ ‘বন্ধুদের নিয়ে আড্ডায় জমে উঠেছিল রবীন্দ্র সরোবর। বন্ধুরা একসঙ্গে আড্ডা দেওয়ার মজাই আলাদা। এটা যখনই হোক না কেন, তবে বন্ধের সময় হলে তো কথাই নাই। কারণ, তখন কোনও চিন্তা বা টাইম লিমিট থাকে না’—এমনটাই বলছিল আড্ডারত একদল তরুণ। কিশোর রাইয়ান থাকেন মোহাম্মদপুর। সে জানায়, তার কাজিনরা এসেছে ধামরাই থেকে ঈদের ছুটিতে তার বাসায় ঘুরতে। তাই কাজিনদের নিয়ে ধানমন্ডি লেকে বেড়াতে এসেছে। ছোট ভাইদের নিয়ে লেকে ওয়াটার বোটে ঘুরেছে সে। রাইয়ান ধানমন্ডি লেকে আগে বোটে চড়লেও তার কাজিনরা আগে চড়েনি। শিশু আহমেদ জানায়, নৌকায় চড়ে তার খুব ভালো লেগেছে। সে আগে কখনও প্যাডেল নৌকায় চড়েনি। মানুষের পদচারণায় ধানমন্ডির লেক এলাকা পরিণত হয়েছে এক মিলনমেলায়। প্রত্যেকে ঘুরে বেড়াচ্ছেন নিজের মতো করে। কেউ কেউ মেতে উঠেছেন বন্ধুদের সঙ্গে আড্ডায়, কেউ বা পরিবার নিয়ে কাটিয়েছেন রেস্টুরেন্টে খাওয়া দাওয়া করে, ঘুরেফিরে। আবার কেউবা কাটিয়েছেন বিভিন্ন জায়গায় ঘুরে ঘুরে ছবি তুলে। |