পুলিশরা মাদকবিরোধী অভিযান চালাতে গিয়ে নিজেরাই জড়িয়ে পড়ছেন
|
মাদকাসক্ত শনাক্তে পুলিশ বাহিনীতে চালু হওয়া ডোপটেস্ট অদৃশ্য কারণে বন্ধ রয়েছে। তিন বছর আগে শুরু হওয়া ডোপটেস্টে চাকরি হারায় ১১৬ পুলিশ সদস্য। এরপরেই বন্ধ হয় গণহারে পুলিশ সদস্যদের ডোপটেস্ট। ডিএমপি বলছে, ভাবমূর্তি রক্ষায় পুলিশের মাদকাসক্ত সদস্য শনাক্তে পরিবর্তন আনা হয়েছে। আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীকে মাদকমুক্ত রাখতে নীতিমালা গঠন না হলেও, যে কোন মুহুর্তে আদেশের বিধান রাখার পরামর্শ সাবেক পুলিশ প্রধান এ কে এম শহীদুল হকের। সে সময় রাজধানীর তেজগাঁও ট্রাকস্ট্যান্ড ও রেললাইন এলাকায় মাদকবিরোধী অভিযানে ২১ কারবারিকে গ্রেফতার করে সংশ্লিষ্ট থানা-পুলিশ। পরে গ্রেফতারকৃতদের জিজ্ঞাসাবাদে বেরিয়ে আসে, পুলিশের মাদকে আসক্তির খবর। মাদক কারবারিদের সহযোগী হিসেবে প্রথমে তেজগাঁও শিল্পাঞ্চল থানার এক এএসআইয়ের নাম আসে। প্রত্যাহার করা হয় আদাবর থানার চার পুলিশ সদস্যকে। এরপর পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে পুলিশের কনেস্টবল থেকে পরিদর্শক পদ মর্যাদার সদস্যদের মাঝে শুরু হয় ডোপটেস্ট। প্রথম এক বছর গতি পেলেও, গত দুই বছর ডোপটেস্ট চলে ধীরগতিতে। আর বর্তমানে তা প্রায় বন্ধ। ২০২০ সালের ১০ মার্চ তৎকালীন ডিএমপি কমিশনার মোহাম্মদ শফিকুল ইসলাম পুলিশকে মাদকমুক্ত করতে ডিএমপিতে ডোপটেস্ট চালু করেন। ২০২২ সালের ২৭ জুলাই পর্যন্ত ১২০ পুলিশ সদস্য মাদকাসক্ত হিসেবে শনাক্ত হয়। এর মধ্যে ২০২১ সালের মার্চ থেকে ২০২২ সালের জুলাই পর্যন্ত ১৬ মাসে মাত্র ২০ জন পুলিশ সদস্য শনাক্ত হন। ২০২২ সালের নভেম্বর থেকে ২০২৩ সালের ১০ মার্চ পর্যন্ত শনাক্ত হন মাত্র ছয় পুলিশ সদস্য। তবে, ডিএমপি থেকে বলা হচ্ছে নিজেদের মধ্যে আত্মশুদ্ধি করতে গিয়ে বির্তকের সৃষ্টি হওয়ায় ডোপ টেস্ট কার্যক্রমে ধীরগতি চলে এসেছে। পুলিশের চাকরিতে প্রবেশের আগেই ডোপটেস্টের নিয়ম চালু করতে নিয়োগের প্রক্রিয়ায় কড়াকড়ির বিষয়ে সংসদ অধিবেশনে আলোচনাও হয়েছে। তবে আর কোনো অগ্রগতি নেই। এদিকে, পুলিশ বাহিনীকে মাদকমুক্ত রাখতে শুধু চাকরি থেকে অব্যাহতিই নয়, তাদের চিকিৎসার ব্যবস্থা করার পরামর্শও দিলেন সাবেক পুলিশ প্রধান। দায়িত্বশীল পদে থাকারা নিজেরাই আসক্ত হয়ে পড়লে মাদক নির্মূলের উদ্যোগ বাধাগ্রস্ত হবে বলে আশংঙ্কা তার। |