মঙ্গলবার ০৮ অক্টোবর ২০২৪ ২৩ আশ্বিন ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

বিদ্যুতের চাহিদা মেটাতে হিমশিম
প্রকাশ: সোমবার, ১৭ এপ্রিল ২০২৩, ০১:৩৯ অপরাহ্ণ

দেশে বিদ্যুৎ উৎপাদনে রেকর্ড হয়েছে। বৃহস্পতিবার (১৩ এপ্রিল) দেশের সর্বোচ্চ ১৫ হাজার ৩০৪ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ উৎপাদন হয়েছে। এর মাধ্যমে ১৫ হাজার মেগাওয়াটের নতুন মাইলফলক অতিক্রম করে বাংলাদেশ। কিন্তু এরপরও গরমের কারণে বিদ্যুতের ওপর চাপ তৈরি হয়েছে। তীব্র গরমে সামান্য বিদ্যুৎ বিভ্রাটও মানতে চাইছেন না গ্রাহকরা। আবার চাইলেই জ্বালানি সংকটে বিদ্যুৎ উৎপাদন আরও বাড়ানো যাচ্ছে না। ফলে চাহিদা মেটাতে এক ধরনের চাপ তৈরি হয়েছে।

চলতি বছর যে পরিমাণ গ্যাসের সরবরাহ বৃদ্ধির কথা পেট্রোবাংলাকে বলা হয়েছিল ঠিক ওই পরিমাণ সরবরাহ পাচ্ছে না পেট্রোবাংলা। ফলে চাহিদার তুলনায় উৎপাদন কম হওয়ার এটাও একটা কারণ বলে মনে করা হচ্ছে।

গ্রাহকদের অনেকেই বলছেন, দিনে ঠিকঠাক বিদ্যুৎ থাকলেও বিদ্যুৎ যাচ্ছে গভীর রাতে। বিশেষ করে রাত ১টার পর বিভিন্ন এলাকায় ঘণ্টাখানেকের লোডশেডিং এর খবর পাওয়া গেছে। অনেকেই বলছেন ঘুমের প্রস্তুতি নিয়ে বিছানায় যেতেই লোডশেডিং হচ্ছে। পরপর প্রতিদিনই যখন এটি হচ্ছে তখন এটিকে ঠিক যান্ত্রিক ত্রুটি বা অন্য কিছু বলে চালানোর সুযোগ নেই বলে উল্লেখ করেন রাজধানীর রামপুরা এলাকার একজন গ্রাহক। তবে তিনি এটাও বলেন, দিনের অন্য সময় ঠিকঠাক বিদ্যুৎ থাকে এ বিষয়েই আমরা বেশ খুশি।

এখন সারাদেশে ৫০০ মেগাওয়াটের মতো লোডশেডিং হচ্ছে। সর্বোচ্চ চাহিদার সময় ১৪ হাজার ৫০০ থেকে ১৫ হাজারের ওপরে বিদ্যুৎ উৎপাদন করা হচ্ছে। এবার গরমের কারণে অন্য বছরের তুলনায় বেশি বিদ্যুৎ উৎপাদন করতে হচ্ছে। বিদ্যুৎ উৎপাদনে সর্বোচ্চ ১১৫০ মিলিয়ন ঘনফুট গ্যাস সরবরাহ করা হচ্ছে। তবে ফার্নেস অয়েল চালিত কেন্দ্রগুলোতে খানিকটা জ্বালানি সংকট বিপাকে ফেলেছে। নইলে চলতি বছর আরো বেশি বিদ্যুৎ উৎপাদন করা সম্ভব হতো।

রবিবার (১৬ এপ্রিল) উৎপাদন লক্ষ্য ধরা হয় ১৩ হাজার ৯৪৮ মেগাওয়াট। অবশ্য আগের দিন শনিবার নিট উৎপাদন হয়েছে ১৪ হাজার ৯৭৮ মেগাওয়াট। এরপরও পিডিবির হিসেবে সারাদশে ৯৫০ মেগাওয়াট লোডশেডিং করতে হয়েছে। সব চাইতে বেশি লোডশেডিং হচ্ছে ময়মনসিংহ জোনে। এখানে দৈনিক ১৯৫ মেগাওয়াট লোডশেডিং করতে হচ্ছে।

কেরানীগঞ্জ থেকে আসাদ জোবায়ের বলেন, কেরানীগঞ্জে গত শুক্রবার থেকে বিদ্যুৎ এই আছে এই নেই। আজও একই অবস্থা। ঘণ্টাখানেক পরপর বিদ্যুৎ এসে ১০ মিনিট করে থাকছে।

বনশ্রী থেকে লিলি আক্তার জানান, দিনে তিন-চার বার বিদ্যুৎ যাচ্ছে। একদিকে তাপমাত্রা বাড়ছে, বাড়ছে লোডশেডিংও। গরমে অসুস্থ হয়ে পড়েছে অনেকেই।

মোহম্মদপুর থেকে আব্বাস বলেন, দিনের মধ্যে কয়েকবার করে বিদ্যুৎ যাচ্ছে। একদিকে গরম অন্যদিক্ব বিদ্যুতের আসা যাওয়ায় অতিষ্ঠ অবস্থা।

কিন্তু এই ভোগান্তির বিষয়ে ঢাকা বিদ্যুৎ বিতরণ কোম্পানি (ডিপিডিসি) এর ব্যবস্থাপনা পরিচালক বিকাশ দেওয়ান বলেন, আমাদের কোনও লোডশেডিং হচ্ছে না। কিছু উপকেন্দ্রে সমস্যার কারণ কোথাও কোথাও বিদ্যুৎ ছিল না। এটাকে লোডশেডিং বলা যাবে না। আজ আমরা সর্বোচ্চ ১৮০০ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ দিচ্ছি আমাদের এলাকায়।

তবে পিডিবি বলছে ঢাকা বিভাগের জেলাগুলোতে সব মিলিয়ে ৬০ মেগাওয়াট লোডশেডিং করা হচ্ছে। ঢাকার সব মিলিয়ে চাহিদা ৫ হাজার ২২০ মেগাওয়াট। সরবরাহ করা হচ্ছে ৫ হাজার ১৬০ মেগাওয়াট।

পল্লী বিদ্যুতায়ন বোর্ডের (আরইবি) আওতাভুক্ত এলাকায় লোডশেডিং হচ্ছে দুই হাজার মেগাওয়াটেরও বেশি। লোডশেডিং এর আওতায় পড়েছে ৬৩টি পল্লী বিদ্যুৎ সমিতি।

 







সর্বশেষ সংবাদ

সর্বাধিক পঠিত

এই ক্যাটেগরির আরো সংবাদ