বুধবার ১১ জুন ২০২৫ ২৮ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

মালয়েশিয়া প্রবাসীদের বিয়ের প্রলোভন দেখিয়ে প্রতারণা
প্রকাশ: রবিবার, ০১ জুন ২০২৫, ০৭:২৬ অপরাহ্ণ

মালয়েশিয়া প্রতিনিধিঃ মালয়েশিয়া প্রবাসীদের বিয়ের প্রলোভন দেখিয়ে প্রতারণা করছেন মালয়েশিয়ার সাইবারজায়া বিশ্ববিদ্যালয়ের এক বাংলাদেশী শিক্ষার্থী আফরিনা আক্তার মিম। (পিতাঃ আরিফুল ইসলাম, মাতাঃ কানন আক্তার। ঠিকানা পশ্চিম দাশড়া, মানিকগঞ্জ পৌরসভা।) দু বছর আগে শিক্ষার্থী হিসেবে মালয়েশিয়া প্রবেশ করলেও বাস্তবে সে প্রবাসীদের কাছে ইতোমধ্যে এক ছলনাময়ী নারী হিসেবে পরিচিতি পেয়েছেন। এরই মধ্যে সে প্রবাসীদের থেকে হাতিয়ে নিয়েছেন কোটি টাকা।

মালয়েশিয়ায় অনেক বাংলাদেশি প্রবাসী একা জীবন যাপন করেন। এই সুযোগকে কাজে লাগিয়ে এই প্রতারক নারী, সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ‘বিয়ের প্রলোভন’ দেখিয়ে প্রবাসীদের কাছ থেকে মোটা অঙ্কের টাকা হাতিয়ে নিচ্ছেন বলে অভিযোগ উঠেছে। তিনি সামাজিক মাধ্যম গুলোতে নতুন নতুন আইডি খুলে আকর্ষণীয় ছবি ও মিথ্যা পরিচয় ব্যবহার করে প্রবাসীদের সঙ্গে সম্পর্ক গড়ে তোলেন। তিনি নিজেকে প্রথমে একজন “সৎ বাবার ঘরের একজন নির্যাতিত মেয়ে” বলে পরিচয় দিয়ে সহানুভূতি আদায়ের চেষ্টা করেন। পরবর্তীতে একসময় নিজ থেকে বিয়ের প্রস্তাব দিয়ে প্রবাসীদের বিশ্বাস অর্জন করেন। তারপর বিভিন্ন অজুহাতে (ভিসা রিনিও, পাসপোর্ট, মায়ের চিকিৎসা, বাসা ভাড়া ইত্যাদি) বিষয়ে টাকা দাবি করেন।

অনেক প্রবাসীই জীবনের সঞ্চয় তার হাতে তুলে দিয়েছেন বিয়ের আশায়। পরে তারা বুঝতে পারেন, মিম আসলে একই ধরনের প্রলোভন একাধিক প্রবাসীকে দেখিয়েছেন, তার বিরুদ্ধে বাংলাদেশেও একাধিক মামলা রয়েছে। যার মধ্যে মানিকগঞ্জের দায়রা ও জর্জ কোর্টে রয়েছে ৫১ লাখ ৯ হাজার ৪৪৩ টাকার একটি মামলা, এবং তার মা কানন আক্তারের বিরুদ্ধে রয়েছে ৯৮ লাখ ২১ হাজার ৮০০ টাকার মামলা। তারা বাংলাদেশে একটা বড় চক্রের সাথে জড়িত, মানিকগঞ্জের স্থানীয় বাসিন্দাদের দেওয়া তথ্যমতে মিমের বাংলাদেশে ৩ টি বিয়ের প্রমান রয়েছে, তার মাও এ যাবৎ কালে বড় অঙ্কের কাবিনের টাকা নিয়ে বাংলাদেশের বিভিন্ন অঞ্চলে অনেকগুলো বিয়ে করেছেন, পরবর্তীতে নিজ থেকে ডিভোর্স বা বিবাহ বিচ্ছেদ করে সে টাকা আদায় করেছেন বলে প্রমান রয়েছে। কিছুদিন সংসার করে স্বামীর থেকে নগদ টাকা পয়সা, স্বর্ণ-অলঙ্কার ও কাবিনের টাকা নিয়ে মা এবং মেয়ে চলে আসে, বিয়েটা যেন তারা নেশা এবং পেশা হিসেবে নিয়েছে।

ভুক্তভোগী এক প্রবাসী বলেন,“আমি ওকে ভালোবেসে সব কিছু দিয়েছিলাম, এমনকি দেশে পরিবারের সাথেও কথা বলিয়েছিলাম। এখন বুঝছি, সে ঠকবাজ  বা  প্রতারক “।  মালয়েশিয়ায় মিমের রয়েছে আরেকটি চক্র যার মূল হোতা মালয়েশিয়ার ইসলামিক বিশ্ববিদ্যালয়ের জুবায়ের, সে পড়াশোনার আড়ালে চালিয়ে যাচ্ছে হুন্ডি ব্যবসা। বাংলাদেশ এবং মালয়েশিয়ায় তার ব্যাংকের লেনদেনের হিসেব পর্যালোচনা করে দেখা যায়, বিগত আওয়ামীলীগ সরকারের আমলে এবং জুলাই গণ–অভ্যুত্থানের পর দেশ থেকে আওয়ামীলীগের নেতাকর্মীদের কোটি কোটি টাকা হুন্ডির মাধ্যমে পাচার সহ বাংলাদেশ থেকে শিক্ষার্থী আনার নাম করে নকল কাগজপত্র ও ভিসা দেখিয়ে শিক্ষার্থীদের কাছ থেকে অনেকগুলো টাকা হাতিয়ে নেওয়ার অভিযোগ রয়েছে।

এমন প্রতারকের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়ার দাবি জানাচ্ছেন ভুক্তভোগীরা। এ ধরনের প্রতারণা যেন আর কেউ করতে না পারে, সে জন্য সাইবার অপরাধ দমন ইউনিট এবং দূতাবাসের সহায়তা চেয়েছেন ভুক্তভোগী প্রবাসীরা। সাধারণ প্রবাসীরা দাবি, এ সকল নারীদের কারণে বিদেশের মাটিতে আমাদের দেশের ভাবমূর্তি নষ্ট হচ্ছে। আমরা এর সঠিক বিচার দাবি করছি।







সর্বশেষ সংবাদ

সর্বাধিক পঠিত

এই ক্যাটেগরির আরো সংবাদ