যেসব কাজ করলে আপনার দোয়া কবুল হবে না
|
ফরজ-ওয়াজিব বিধানের লঙ্ঘন, হারাম ও নিষিদ্ধ কাজ করাই দোয়া কবুলের পথে অন্তরায়। কেননা এসব কাজের মাধ্যমে আল্লাহর সঙ্গে বান্দার সম্পর্ক ছিন্ন হয়ে যায়। তাই তাদের দোয়া আল্লাহ কবুল করেন না। মানুষ বিপদে পড়লেই দোয়া করে, যেন বিপদমুক্ত হওয়া যায়। সুস্থ কিংবা ভালো অবস্থায় দোয়া করে না। এ বিষয়ে নবিজি সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন- আল্লাহ তাআলা হজরত ইউনুস আলাইহিস সালাম সম্পর্কে বলেন, ‘তিনি যদি আগে তাসবিহকারীদের অন্তর্ভূক্ত না হতেন তাহলে তিনি কেয়ামত পর্যন্ত মাছের পেটে থাকতেন।’ হারাম আয় দ্বারা খাদ্য-পানীয় খাওয়া ও হারাম অর্থের কনা পোশাক পরা দোয়া কবুলের ক্ষেত্রে সবচেয়ে বড় বাধা। এ প্রসঙ্গে হাদিসে এসেছে- নবিজি আরও বলেছেন, ‘তোমরা খাবারকে পবিত্র করো, তাহলে তোমাদের দোয়া কবুল হবে।’ হাদিসে পাকে নেক (আমলের) কাজের দোহাই দিয়ে দোয়া করার কথা উল্লেখ করা হয়েছে। যেন এক গুহায় পাথর দ্বারা অবরুদ্ধ তিন ব্যক্তি তাদের তিনটি নেক আমলের কথা উল্লেখ করে দোয়া করায় আল্লাহ তাআলা তাদের দোয়া কবুল করেন এবং গুহার মুখ অবরুদ্ধকারী পাথরটিকে সরিয়ে তাদেরকে মুক্তি দেন। তাই কোনো নেক ব্যক্তি নয়, বরং নেক আমলকে উসিলা হিসেবে উপস্থাপন করা যায়। তবে আল্লাহ তাআলা তার কাছে কোনো উসিলা ছাড়াই দোয়া করার নির্দেশ দিয়েছেন। গাফেল ও উদাস মনের ব্যক্তির দোয়াও আল্লাহ তাআলা কবুল করেন না। হাদিসে পাকে এসেছে- হজরত হুজায়ফা বিন ইয়ামান রাদিয়াল্লাহু আনহু বর্ণনা করেছেন, নবিজি সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন, ‘আমার প্রাণ যার হাতে, সেই আল্লাহর শপথ! হয় তোমরা সৎ কাজের আদেশ দাও এবং অসৎ কাজের প্রতিরোধ করবে, না হয় শিগগিরই তোমাদের উপর নিজ আজাব পাঠাবেন; এরপর তোমরা তাঁর কাছে দোয়া করবে, তিনি দোয়া কবুল করবেন না।’ (তিরমিজি) হজরত আলি রাদিয়াল্লাহু আনহু বর্ণনা করেছেন, নবিজি সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন, ‘দোয়া মুমিনের হাতিয়ার ও দ্বীনের খুঁটি এবং আসমান ও জমিনের আলো।’ (মুসতাদরাকে হাকেম) হজরত আব্দুল্লাহ ইবনে ওমর রাদিয়াল্লাহু আনহু বর্ণনা করেছেন, নবিজি সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন, ‘যে বিপদ নাজিল হয়েছে কিংবা এখনও নাজিল হয়নি তার জন্য দোয়া উপকারী। হে আল্লাহর বান্দারা, তোমাদের দোয়া করা জরুরি।’ (মুসতাদরাকে হাকেম) ইমাম ইবনুল কায়্যিম রাহমাতুল্লাহি আলাইহি বলেছেন, ‘মকসুদ অর্জন ক্ষতিকর জিনিস প্রতিরোধে দোয়া হচ্ছে শক্তিশালী উপায়। দোয়ার ফলাফল কয়েক কারণে দেখা যায় না। যদি মন্দ কাজ বা লক্ষ্য অর্জনের জন্য দোয়া করা হয় তাতে আল্লাহ তাআলার নাফরমানি থাকায় তা কবুল করেন না। দুর্বল মন ও বেপরোয়া মনের দোয়াও আল্লাহ কবুল করেন না। তিনি আরও বলেন, ‘দোয়া হচ্ছে সর্বোত্তম চিকিৎসা। তা বিপদের শত্রু এবং তা নাজিলে বাধা সৃষ্টি করে কিংবা হাল্কা করতে সাহায্য করে। দোয়া মুমিনের অস্ত্র। নবিজি সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন, দোয়া কবুলের বাপারে তাড়াহুড়ো করলে দোয়া কবুল হয় না।’ (মুসলিম, তিরমিজি) আল্লাহ তাআলা মুসলিম উম্মাহকে উল্লেখিত বিষয়গুলো মেনে চলার তাওফিক দান করুন। আমিন। |