যে শর্তে মিরপুরের গ্যাস সরবরাহ শুরু
|
একদিন বন্ধ রাখার পর রাজধানীর মিরপুরের রূপনগরের ইস্টার্ন হাউজিংয়ে গ্যাস সরবরাহ শুরু হয়েছে। আজ মঙ্গলবার (৯ মে) সন্ধ্যা পৌনে ৬টা নাগাদ এই গ্যাস সরবরাহ শুরু হয়। তবে এই সংযোগ ফিরে পেতে সে এলাকায় অবস্থিত ১৮টি কারখানা বন্ধের শর্ত মেনে নেন এলাকাবাসী। এর আগে সোমবার (৮ মে) অবৈধ গ্যাস সংযোগ বিচ্ছিন্ন করার অভিযানের অংশ হিসেবে মিরপুরের রূপনগরের ইস্টার্ন হাউজিং এর পুরো এলাকায় গ্যাস সরবরাহ বন্ধ করে দেয় তিতাস। তিতাস জানায়, ইস্টার্ন হাউজিংয়ের ডি ব্লক থেকে কে ব্লক এবং আলোকদি এলাকায় ১৮টি কারখানা চলছিল অবৈধ গ্যাস সংযোগের মাধ্যমে। বারবার অভিযান চালিয়েও এসব সংযোগ বিচ্ছিন্ন করা যাচ্ছিল না। ইস্টার্ন হাউজিংয়ের এসব কারখানায় ছয় থেকে সাত বার সংযোগ বিচ্ছিন্ন করা হয়। কিন্তু পরে আবার তারা সংযোগ নিয়ে নেয়। এইভাবে বারবার অভিযান চালিয়ে অবৈধ সংযোগ বন্ধ করে না পেরে এবার পুরো এলাকায় গ্যাস সরবরাহ বন্ধ করে দিয়েছে তিতাস। এতে অবৈধ সংযোগ নেওয়া গ্রাহকদের পাশাপাশি গ্যাস সরবরাহ বন্ধ হয়ে যায় বৈধ গ্রাহকদের। আজ সারাদিনই বন্ধ ছিল গ্যাস সরবরাহ। ফের ভোগান্তিতে পড়েন বৈধ গ্রাহকরাও। সোমবার বিকালে লাইন কাটার পর থেকেই স্থানীয় হোটেলগুলোতে ক্রেতাদের ভিড় লেগে যায়। উপায় না দেখে খিচুড়ি বাড়তি দাম দিয়ে কিনে খান এলাকাবাসী। বাসায় সাড়ে তিন বছরের মেয়ে আর স্ত্রী নিয়ে বিপদে পড়েন সেফাউল ইসলাম। তিনি জানান, কাল থেকে গ্যাস নেই। মাইকিংও করে জানায়নি। বাসায় ছোট বাচ্চা। পরোটা আর পাউরুটি খাওয়াচ্ছি দোকান থেকে কিনে। এলাকার আরেক বাসিন্দা বলেন, অবৈধভাবে গ্যাস সংযোগ বিচ্ছিন্ন অভিযানের কারণে আমরা কেন ভুগবো। এই কয়েকদিন যে গ্যাস পাবো না, সরকার কি এই টাকা না নিয়ে থাকবে? একই এলাকার সায়রা কাকলী বলেন, দুই ছোট বাচ্চাকে নিয়ে খুব সমস্যায় পড়েছি। বাচ্চাদের খাবারের তো ব্যবস্থা করতে হবে। বাইরের খাবার দিয়ে কোনোভাবে চলছে। ২৪ ঘণ্টা পর মঙ্গলবার সন্ধ্যায় গ্যাস সরবরাহ শুরু করে তিতাস। অভিযানে অংশ নেওয়া তিতাসের ব্যবস্থাপক মো. শাহিদুর রহমান বলেন, এই এলাকায় প্রচুর অবৈধ সংযোগ। প্রচুর গ্যাস চুরি হচ্ছিল। তাই গতকাল আমরা পুরো এলাকায় গ্যাস সংযোগ বন্ধ করে দিয়েছিলাম। কিন্তু আজ ১৮টি কারখানা একেবারে বন্ধের শর্তে আমরা আবার গ্যাস সরবরাহ শুরু করেছি। এদিকে তিতাস সূত্র জানায়, আজ মঙ্গলবার দুপুরের দিকে এলাকার জনপ্রতিনিধি ও সংসদ সদস্য ইলিয়াস মোল্লাসহ এলাকাবাসীর সঙ্গে সভা করেছে তিতাস। সভায় তিতাসের মহাব্যবস্থাপক খালেদ হোসেন ও আব্দুল জব্বারসহ সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন। সভায় ইলিয়াস মোল্লাসহ এলাকাবাসী সেই অবৈধ ১৮টি কারখানা বন্ধের নিশ্চয়তা দেন তিতাসকে। এই ১৮টি কারখানা আর চালু করা হবে না এই শর্তে তিতাস এলাকায় আবার গ্যাস সরবরাহ শুরু করে বলে জানা যায়। এর আগে একইভাবে অবৈধ গ্যাস সংযোগ বেশি থাকার অভিযোগে তিতাস গ্যাস সরবরাহ বন্ধ করে দিয়েছিল কামরাঙ্গিরচর ও সোনারগাঁওয়ে। তিতাস সংশ্লিষ্টরা বলছেন, এরপর দুই এলাকারই বৈধ গ্রাহকরা নিজেরা অবৈধ সংযোগ চিহ্নিত করেন। তিতাসের সঙ্গে সভা করে এইসব সংযোগ বিচ্ছিন্ন করতে এবং পরে যাতে আবার সংযোগ দেওয়া না হয় সে বিষয়ে তিতাসকে নিশ্চয়তা দিয়ে গ্যাস সরবরাহ স্বাভাবিক করেন। এবারও একইভাবে বিষয়টি মীমাংসা হলো। |