সরবরাহ বেড়ছে তবুও কমেনি ইলিশের দাম
|
দীর্ঘ দুই মাসের নিষেধাজ্ঞার পর গত সোমবার (১ মে) থেকে ইলিশ আহরণে নামেন চাঁদপুরের জেলেরা। যদিও প্রথমদিন নদীতে কাঙ্ক্ষিত ইলিশ না পাওয়ায় মাছঘাট ছিল প্রায় ইলিশশূন্য। তবে বর্তমানে ঘাটে বেড়েছে ইলিশের সরবরাহ। গত দুইদিন ধরে ঘাটে ৩০০ থেকে ৪০০ মণ ইলিশ আসছে বলে জানান আড়তদাররা। তবে ইলিশের সরবরাহ বাড়লেও দাম কমেনি বলে দাবি ক্রেতাদের। বুধবার (৩ মে) সকালে চাঁদপুর বড় স্টেশন মাছঘাট ঘুরে দেখা যায়, ইলিশের সরবরাহ বাড়ায় কর্মচাঞ্চল্য ফিরেছে ঘাটে। আড়তদারদের হাঁকডাকে মুখরিত ঘাট এলাকা। আবার শ্রমিকরাও ব্যস্ত সময় পার করছেন প্যাকেজিংয়ের কাজে। তবে ক্রেতাদের দাবি, এখনো দাম হাতের নাগালের বাইরে। এতে মাছ কিনতে হিমশিম খাচ্ছেন তারা। ক্রেতারা বলছেন, অভিযানের পর এখন ঘাটে মোটামুটি মাছ দেখা যাচ্ছে। তবে মাছের দাম স্বাভাবিক না। আর আড়তদাররা বলছেন, যখন বেশি মাছ ধরা পড়বে তখন দাম কমবে। মাছঘাটের কয়েকজন বিক্রেতা জানান, বুধবার চাঁদপুরের এক কেজি সাইজের লোকাল ইলিশের দাম ২০০০ থেকে ২২০০ টাকা। আর একই ওজনের দক্ষিণাঞ্চল থেকে আসা ইলিশের দাম ১৬০০ টাকা। প্রতিটি ৮০০ থেকে ৯০০ গ্রাম সাইজের ইলিশের কেজি পড়ছে ১২০০ থেকে ১৩০০ টাকা। আর চাঁদপুরের পদ্মা-মেঘনার ইলিশ হলে তা ১৭০০ থেকে ১৮০০ টাকা। আর ৫০০ থেকে ৭০০ গ্রাম সাইজের ইলিশ এক হাজার টাকা ও চাঁদপুরের লোকাল ইলিশ হলে তা ১৫০০ থেকে ১৬০০ টাকা কেজি বিক্রি হচ্ছে। তবে আজ মাছঘাটে বড় সাইজের ইলিশের পরিমাণ ছিল একেবারেই কম। রানা নামে এক ক্রেতা বলেন, ঘাটে আসলাম ইলিশ নেওয়ার জন্য। কিন্তু যে দাম তাতে আজকে আর মাছ কেনা হলো না। দেখি পরে আবার আসবো। যদি এক কেজি ওজনের ইলিশের দাম এক হাজার টাকার মধ্যে আসে তখন নেবো। ঘাটের আড়তদার সাইফুল ইসলাম বলেন, প্রথমদিনের তুলনায় এখন মাছের সরবরাহ বেশি এবং ক্রেতাও বাড়ছে। চাঁদপুরের পদ্মা-মেঘনা নদীর মাছও কিছুটা এসেছে। তবে পরিমাণ অনেক কম। আর নোয়াখালী, সন্দীপ ও হাতিয়ার মাছ একটু বেশি এসেছে। ঘাটে আসা ইলিশের বেশির ভাগ ৫০০ থেকে ৮০০ গ্রাম ওজনের। বড় ইলিশের পরিমাণ কম। সম্রাট নামে আরেক আড়তদার বলেন, বর্তমানে সবকিছুর দাম বাড়তি, জেলেদের খরচ বেড়েছে। যার কারণে মাছের দাম বাড়তি। তাছাড়া আমাদের চাঁদপুরে ইলিশের যে চাহিদা রয়েছে তার তুলনায় সরবরাহ অনেক কম হওয়ায় তার প্রভাব পড়েছে দামে। চাঁদপুর মৎস্য বণিক সমবায় সমিতির সাধারণ সম্পাদক মো. শবেবরাত সরকার বলেন, গতকাল ও আজ চাঁদপুরে মাছের সরবরাহ বেড়েছে। আজকেও প্রায় ৩০০ মণের কাছাকাছি ইলিশ ঘাটে এসেছে। তিনি বলেন, ইলিশ প্রাপ্তির মৌসুম হলো আগস্ট ও সেপ্টেম্বর মাস। তখন জেলেদের জালে অনেক ইলিশ ধরা পড়বে। তবে আমরা আশা করছি, কয়েকদিনের মধ্যে বৃষ্টিপাত হলে নদীতে পানি বাড়লে চাঁদপুরের পদ্মা-মেঘনার ইলিশ বেশি ধরা পড়বে। তখন সরবরাহ বাড়লে মাছের দাম আরও অনেক কমবে বলে ধারণা করছি। |