৮ হাজার কোটি টাকা অনুমোদন মেট্রোরেল রুটের জন্য
|
২০২৩-২৪ অর্থবছরের জন্য দুই লাখ ৬৩ হাজার কোটি টাকার মূল বার্ষিক উন্নয়ন কর্মসূচি (এডিপি) বা উন্নয়ন বাজেট চূড়ান্ত অনুমোদন দিয়েছে সরকার। এবার সর্বোচ্চ ৭৫ হাজার কোটি টাকা বরাদ্দ পেয়েছে পরিবহন ও যোগাযোগ খাত। এরমধ্যে তিন মেট্রোরেল রুটের জন্য অনুমোদন দেওয়া হয়েছে আট হাজার ২২৫ কোটি টাকা। এমআরটি লাইন-৬ এর জন্য বরাদ্দ রাখা হয়েছে তিন হাজার ৪২৫ কোটি টাকা, আর এমআরটি-১ এর জন্য বরাদ্দ তিন হাজার ৯১০ কোটি টাকা। এছাড়া ৮৮০ কোটি টাকা বরাদ্দ রাখা হয়েছে এমআরটি-৫ এর জন্য। বৃহস্পতিবার (১১ মে) রাজধানীর শেরেবাংলা নগরে এনইসি সভায় এ অনুমোদন দেওয়া হয়। সভায় সভাপতিত্ব করেন প্রধানমন্ত্রী ও এনইসি চেয়ারপারসন শেখ হাসিনা। বৈঠক শেষে এ বিষয়ে সাংবাদিকদের ব্রিফ করেন পরিকল্পনামন্ত্রী এম এ মান্নান এবং প্রতিমন্ত্রী ড. শামসুল আলম। এবার এডিপিতে সর্বোচ্চ ৭৫ হাজার ৯৪৪ কোটি টাকা বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে পরিবহন ও যোগাযোগ খাতে। এডিপি পর্যালোচনা করে দেখা যায়, যোগাযোগ খাতের মোট বরাদ্দের মধ্যে ৪৪ হাজার ৫৭১ কোটি টাকা সরকারি ব্যয়, আর উন্নয়ন সহযোগীরা দেবে ৩১ হাজার ৩৭৩ কোটি টাকা। যোগাযোগ খাতের মধ্যে সবচেয়ে বেশি বরাদ্দ পেয়েছে সড়ক পরিবহন ও মহাসড়ক বিভাগ। এই বিভাগের জন্য বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে ৩৪ হাজার ৬২ কোটি টাকা। এরপরই রেলপথ মন্ত্রণালয়ের জন্য ১৪ হাজার ৯৬০ কোটি টাকা বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে। এছাড়া নৌপরিবহন মন্ত্রণালয়ের জন্য ৯ হাজার ৪৭৩ কোটি টাকা, সেতু বিভাগের জন্য ৯ হাজার ৬৪ কোটি, বেসামরিক বিমান পরিবহন ও পর্যটন মন্ত্রণালয়ের জন্য ছয় হাজার ৪৭০ কোটি টাকা বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে। এছাড়া বিদ্যুৎ ও জ্বালানি খাতে বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে ৪৪ হাজার ৩৯৩ কোটি টাকা। এ খাতে সবচেয়ে বেশি বরাদ্দ পাচ্ছে বিদ্যুৎ বিভাগ। এ বিভাগের জন্য বরাদ্দ ৩৩ হাজার ৭৭৫ কোটি টাকা। এরপরই রয়েছে শিক্ষাখাত। আগামী এডিপিতে শিক্ষাখাতে বরাদ্দ রাখা হয়েছে ২৯ হাজার ৮৮৯ কোটি টাকা। যা মোট এডিপির ১১ দশমিক ৩৬ শতাংশ, সবগুলো খাতের এডিপির মধ্যে তৃতীয় সর্বোচ্চ বরাদ্দ এটি। স্থানীয় সরকার ও পল্লী উন্নয়ন রয়েছে চতুর্থ অবস্থানে। এই বিভাগের জন্য বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে ১৮ হাজার ৮৮০ কোটি টাকা। এরমধ্যে স্থানীয় সরকার বিভাগের জন্য বরাদ্দ ১৬ হাজার ১৭৯ কোটি টাকা রাখা হয়েছে। এছাড়া গৃহায়ন ও কমিউনিটি সুবিধার জন্য ২৭ হাজার ৪৫ কোটি, স্বাস্থ্যখাতে ১৬ হাজার ২০৪ কোটি, কৃষিতে ১০ হাজার ৭০৭ কোটি, জলবায়ু পরিবর্তন এবং পানি সম্পদের জন্য আট হাজার ৯৯৫ কোটি, শিল্প ও অর্থনৈতিক সেবায় পাঁচ হাজার ৩৬২ কোটি, জনশৃঙ্খলা ও সুরক্ষায় তিন হাজার ৪৩৬ কোটি, বিজ্ঞান এবং তথ্যপ্রযুক্তিতে পাঁচ হাজার ৩২১ কোটি, ধর্ম, সংস্কৃতি ও বিনোদনে দুই হাজার ২৯০ কোটি, সাধারণ সরকারি সেবা খাতে দুই হাজার ১১৪ কোটি টাকা বরাদ্দ রাখা হয়েছে। আগামী অর্থবছরে সবচেয়ে কম বরাদ্দ পাচ্ছে প্রতিরক্ষা খাত। এ খাতের বরাদ্দ এক হাজার ১০ কোটি টাকা। এদিকে বেশি বরাদ্দ পাওয়া মন্ত্রণালয় ও বিভাগগুলোর মধ্যে রয়েছে- ১২ হাজার ১৮ কোটি টাকা প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়, মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা বিভাগ পেয়েছে ১৪ হাজার ৮৫ কোটি টাকা, বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি মন্ত্রণালয় পেয়েছে ১২ হাজার ৯৮০ কোটি টাকা, স্বাস্থ্যসেবা বিভাগ পেয়েছে ১২ হাজার ২০৯ কোটি টাকা, রেলপথ মন্ত্রণালয় পেয়েছে ১৪ হাজার ৯৬০ কোটি টাকা, নৌপরিবহন মন্ত্রণালয় পেয়েছে ৯ হাজার ৪৭৩ কোটি টাকা, সেতু বিভাগ পেয়েছে ৯৬৪ কোটি টাকা। এদিকে চলতি অর্থবছরের নতুন প্রকল্পের জন্য ১৬ হাজার ৯৪ কোটি টাকা বরাদ্দ রাখা হয়েছে। বড় প্রকল্পগুলোর মধ্যে রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্রে বরাদ্দ রাখা হয়েছে ৯ হাজার ৭০৬ কোটি টাকা। বঙ্গবন্ধু টানেল প্রকল্পের বরাদ্দ হয়েছে ৭৩৫ কোটি টাকা। পদ্মা রেল সেতু প্রকল্পে বরাদ্দ রাখা হয়েছে পাঁচ হাজার ৫০০ কোটি টাকা। এছাড়া দোহাজারী রামু কক্সবাজার রেল প্রকল্পে বরাদ্দ রাখা হয়েছে এক হাজার ৪০০ কোটি টাকা। শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের তৃতীয় টার্মিনাল নির্মাণ প্রকল্পে বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে পাঁচ হাজার ৪৯৮ কোটি টাকা। ঢাকা আশুলিয়া এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়েতে বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে | |