মঙ্গলবার ২২ অক্টোবর ২০২৪ ৬ কার্তিক ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

গুজব মোকাবিলা আমাদের বড় চ্যালেঞ্জ: তথ্যমন্ত্রী
প্রকাশ: বুধবার, ১২ জুলাই ২০২৩, ০৫:২৭ অপরাহ্ণ

ইউরোপের মতো বাংলাদেশে বিভিন্ন সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম নিবন্ধিত না। কাজেই এসব মাধ্যম ব্যবহার করে যখন কোনও গুজব ছড়ানো হয়, তখন সেটি বড় চ্যালেঞ্জ হিসেবে দেখা দেয়। বুধবার (১২ জুলাই) সচিবালয়ে নিজ দফতরে ইউরোপীয় ইউনিয়নের প্রতিনিধিদের সঙ্গে বৈঠকের পর সাংবাদিকদের এমন কথা বলেন তথ্য ও সম্প্রচারমন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ।

আজ দেশের প্রধান দুটি রাজনৈতিক দলের কর্মসূচি। কেউ শান্তিপূর্ণ সমাবেশ করছেন, কেউ একদফার দাবি তুলছেন। এ নিয়ে ইইউ প্রতিনিধিরা কিছু বলেছেন কিনা এমন প্রশ্নে মন্ত্রী বলেন, ‘দেখুন, রাজনৈতিক কর্মসূচি নিয়ে কোনও আলোচনা হয়নি। নির্বাচনের সময়ে আমাদের মন্ত্রণালয় কী ভূমিকা রাখবে, সেটি জানতে চেয়েছে। আমরা বলেছি, বাংলাদেশের মিডিয়া হচ্ছে প্রাইভেট। বাংলাদেশে বিটিভি একটি সরকারি চ্যানেল, আর ৩৫টি প্রাইভেট চ্যানেল সম্প্রচারে আছে।

তিনি আরও বলেন, ‘আমাদের চ্যালেঞ্জ, সামাজিকমাধ্যমে যে গুজব ছড়ানো হয়, সেটি। তাতে করে দেশে হানাহানি তৈরি হয়েছে। এই চ্যালেঞ্জগুলো নিয়ে আলোচনা হয়েছে। এ বিষয়টি আলোচনায় উঠে এসেছে। সামাজিকমাধ্যমের প্ল্যাটফর্মগুলোর রেসপনসিবিলিটি (দায়িত্বশীলতা) আছে। আপনারা জানেন, ইউরোপীয় ইউনিয়ন (ইইউ) এ বছরে আইন সংশোধন করেছে। তারা বলেছে, প্রতিটি সামাজিকমাধ্যমকে ইউরোপে নিবন্ধিত হতে হবে। যেটি আমরা বহুদিন ধরে বলে এসেছি। ফেসবুক, টুইটার, ইউটিউবসহ সব সামাজিকমাধ্যমকে আমরা সরকারের পক্ষ থেকে বলে এসেছি, বাংলাদেশের আইন অনুসারে এখানে নিবন্ধিত হওয়ার জন্য। কিন্তু এখনও হয়নি। ইউরোপে কিন্তু আইন সংশোধন করা হয়েছে। ইউরোপীয় ইউনিয়ন একটি ফ্রেমওয়ার্ক ল’ তৈরি করেছে। সব সামাজিকমাধ্যমকে ইউরোপে নিবন্ধিত হতে হবে। আইন অনুসারে তারা এটি করতে বাধ্য।’

ড. হাছান বলেন, ‘আমাদের দেশে এখনও তারা নিবন্ধিত হয়নি। এটি অবশ্যই বড় চ্যালেঞ্জ। আমরা অতীতে দেখেছি, কোনও গুজব যখন ছড়ানো হয়, বিতর্কিত পোস্ট যখন দেওয়া হয়, সেটি যখন আমরা সরাতে বলি, তখন তা সরানো হয়। আবার যখন সরায়, তখন ক্ষতি যা হওয়ার হয়ে যায়। কারণ, গুজব তো কয়েক ঘণ্টায় ছড়ায়, যদিও বা তারা সেটি সরায়, সেটা মাত্র ১০ শতাংশ। ৯০ শতাংশ তারা সরায় না। এতে সামাজিকভাবে হানাহানি তৈরি হয়। এটি একটি বড় চ্যালেঞ্জ, আমরা এটি নিয়ে আলোচনা করেছি।’

তথ্যমন্ত্রী আরও বলেন, আরেকটি বিষয় আমি তাদের বলেছি, ইউরোপের যেসব দেশ থেকে তারা এসেছেন, একজন গ্রিস, আরেকজন ইতালি ও আরেকজন পর্তুগাল থেকে। সেখানেও যে সরকার ক্ষমতায় থাকে, তারাই নির্বাচন পরিচালনা করে। আইন অনুসারে আমাদের দেশেও তা-ই হবে। আমরা তাদের সেটি জানিয়েছি। কিন্তু নির্বাচনের সময় সরকারের রুটিন কাজ করা ছাড়া আর কোনও ক্ষমতা থাকে না। সরকারের সব প্রতিষ্ঠান যারা নির্বাচনের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট, তাদের চাকরি নির্বাচন কমিশনের হাতে ন্যস্ত হয়। সেটি তাদের জানিয়েছি। নির্বাচন কমিশন খুবই শক্তিশালী, তারা খুবই সক্রিয়।

আওয়ামী লীগের এই যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক বলেন, যে কারণে গাইবান্ধা-৫ আসনে যে উপনির্বাচন হয়েছে, তাতে ২০-২৫টি কেন্দ্রে গণ্ডগোল হয়েছে, আইন অনুসারে এসব কেন্দ্রের ভোট বাতিল করার কথা। কিন্তু পুরো নির্বাচন বাতিল করে দেওয়া হয়েছে। সে বিষয়টি আলোচনা করেছি। এর অর্থ হচ্ছে, ইলেকশন কমিশন হ্যাজ দ্য মাসল (নির্বাচন কমিশনের সেই ক্ষমতা আছে)। আমরা যদি আদালতে গিয়ে চ্যালেঞ্জ করতাম, তাহলে কিন্তু আমাদের পক্ষে রায় আসতো। সে বিষয়টি তাদের বলেছি।

তত্ত্বাবধায়ক সরকার ইস্যুতে কোনও আলোচনা হয়েছে কিনা প্রশ্নে মন্ত্রী বলেন, এ নিয়ে কোনও আলোচনা হয়নি। বিএনপি ছাড়া এ নিয়ে কারও মাথাব্যথা নেই।

বিরোধী দলকে নির্বাচনে আনা নিয়ে কোনও কথা হয়েছে কিনা প্রশ্নে মন্ত্রী বলেন, আমি তাদের বলেছি। তাদের পর্যবেক্ষক মিশন আসার ব্যাপারে পরীক্ষা-নিরীক্ষা করতেই এসেছে। বিরোধী দলকে নির্বাচনে আনতে তারা এখানে আসেনি। আমি তাদের বলেছি, আমরা চাই, বিএনপিসহ সব রাজনৈতিক দল আগামী নির্বাচনে অংশগ্রহণ করুক।

আজ বিএনপির বিক্ষোভ ও আওয়ামী লীগের শান্তি সমাবেশ রয়েছে, এটা নিয়ে জনগণের উদ্দীপনা রয়েছে। এ নিয়ে প্রশ্ন করা হলে তিনি বলেন, আমরা দেশে কাউকে বিশৃঙ্খলা করতে দেবো না। বিএনপির উদ্দেশ্য হচ্ছে দেশে বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি করা। সাপের খোলস বদলানোর মতো।

 







সর্বশেষ সংবাদ

সর্বাধিক পঠিত

এই ক্যাটেগরির আরো সংবাদ