বৃহস্পতিবার ৩০ অক্টোবর ২০২৫ ১৪ কার্তিক ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

দলিল লেখার সময় অসাবধানতা হতে পারে বিপদ! – ক্রেতার জন্য জরুরি ১১টি সচেতনতামূলক নির্দেশনা

দেশ দেশান্তর ডেস্ক:সম্পত্তি ক্রয়ের ক্ষেত্রে ‘দলিল লেখক’-এর কাছে দায়িত্ব দিয়ে নিশ্চিন্ত হয়ে থাকা ক্রেতার জন্য মারাত্মক ভুল হতে পারে। কারণ, দলিলে কোনো ভুল বা অসঙ্গতি ধরা পড়লে এর মাশুল দিতে হয় ক্রেতাকেই, দলিল লেখক নয়। তাই দলিল লেখার সময় প্রতিটি ধাপে ক্রেতার সচেতন থাকা অত্যন্ত জরুরি।

বিশেষজ্ঞদের মতে, সম্পত্তির দলিল লেখার সময় নিচের ১১টি বিষয় খেয়াল রাখা আবশ্যক।

Ad

১️⃣ দলিল সম্পাদনকারী বিক্রেতা – তিনি আইনত সাবালক ও সুস্থ মস্তিষ্কসম্পন্ন কিনা, কিংবা দেউলিয়া ঘোষিত কিনা তা যাচাই করতে হবে।

২️⃣ দলিলের ধরন – সাফ কবলা, বায়না পত্র, দানপত্র বা হেবার ঘোষণাপত্র— কোন ধরনের দলিল তা সঠিকভাবে দেখতে হবে।

৩️⃣ জমির পরিমাণ ও বিক্রয়মূল্য – প্রস্তাবিত জমির আয়তন, মূল্য, পরিশোধিত ও বাকি টাকা দলিলে স্পষ্ট থাকতে হবে।

৪️⃣ পক্ষ পরিচয় তথ্য – উভয় পক্ষের নাম, ঠিকানা, ধর্ম, পেশা ও জাতীয় পরিচয়পত্রের তথ্য যেন খতিয়ানের সঙ্গে মিলে থাকে।

৫️⃣ স্বত্বের বর্ণনা – বিক্রেতার মালিকানার ভিত্তি ও পূর্বের দলিল নম্বর, তারিখ এবং খতিয়ান উল্লেখ থাকতে হবে।

৬️⃣ উত্তরাধিকার সূত্রে প্রাপ্ত জমি হলে – মূল মালিকের সঙ্গে বিক্রেতার সম্পর্ক সঠিকভাবে যাচাই করতে হবে।

৭️⃣ জমির তফশিল – জেলার নাম, মৌজা, দাগ, খতিয়ান ও শ্রেণি খতিয়ানের সঙ্গে হুবহু মিলে কিনা তা নিশ্চিত করতে হবে।

৮️⃣ চৌহদ্দি বর্ণনা – উত্তর, দক্ষিণ, পূর্ব, পশ্চিম দিকের সীমানা ও প্রতিবেশী মালিকদের নাম সঠিকভাবে থাকতে হবে।

৯️⃣ বিক্রেতার স্বাক্ষর বা টিপসহি – দলিলের প্রথম পৃষ্ঠা থেকে শেষ পর্যন্ত বিক্রেতার স্বাক্ষর বা টিপসহি সঠিকভাবে আছে কিনা দেখতে হবে।

🔟 দলিল লেখক ও সাক্ষীর স্বাক্ষর – বিক্রেতার নিচে দলিল লেখকের স্বাক্ষর এবং পরবর্তীতে দুইজন সাক্ষী ও একজন সনাক্তকারীর স্বাক্ষর থাকা বাধ্যতামূলক।

১১️⃣ কাটাকাটি বা ঘষামাজা এড়ানো – কোনো ভুল হলে তা দলিলের শেষে কৈফিয়ত আকারে উল্লেখ করতে হবে এবং দলিল লেখকের স্বাক্ষর দিতে হবে।

এছাড়াও, দলিলের আগে তহসিল অফিস থেকে জমির দাগ ও খতিয়ান নম্বর যাচাই করে নেওয়া এবং প্রয়োজনে খতিয়ানের সই-মোহরকৃত নকল সংগ্রহ করা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।

আইনজীবীদের ভাষায়-সচেতন নাগরিক হোন, নিজের সম্পত্তির নিরাপত্তা নিজেই নিশ্চিত করুন। একটি ভুল দলিল মানেই বছরের পর বছর মামলা, সময় ও অর্থের অপচয়। তাই দলিল লেখার সময় সতর্কতাই সর্বোত্তম সুরক্ষা।