শুক্রবার ১৮ অক্টোবর ২০২৪ ২ কার্তিক ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

বাজারে চাহিদার তুলনায় দ্বিগুণ গরু থাকলেও দাম বেশি
প্রকাশ: শনিবার, ২৪ জুন ২০২৩, ০৯:১৫ অপরাহ্ণ

রাজশাহীতে চাহিদার তুলনায় দ্বিগুণ কোরবানিযোগ্য পশু আছে। এরপরও অতিরিক্ত দাম চাচ্ছেন বিক্রেতারা। দামের কারণে হিসাব মেলাতে পারছেন না অধিকাংশ ক্রেতা। এ জন্য বিক্রি হচ্ছে কম। শনিবার (২৪ জুন) রাজশাহীর সর্ববৃহৎ সিটি পশুর হাট ঘুরে এ চিত্র দেখা গেছে। ঈদুল আজহা উপলক্ষে এখানে প্রতিদিন বসছে হাট। ঈদের বাকি হাতেগোনা কয়েকদিন। কিন্তু এখনও পশুর দাম ক্রেতাদের নাগালের বাইরে।

জেলা প্রাণিসম্পদ অধিদফতরের তথ্যমতে, গত কয়েক বছর ধরে জেলায় কোরবানির পশুর চাহিদা মেটাচ্ছে দেশি গরু। এবারও তার ব্যত্যয় হয়নি। বিগত বছরগুলোর তুলনায় বেড়েছে পশু উৎপাদন। সবচেয়ে বেশি বেড়েছে ছাগল উৎপাদন। হিসাবে এবার কোরবানিযোগ্য পশু রয়েছে ছয় লাখ ৪৮ হাজার। এর মধ্যে গরু ও মহিষ এক লাখ ২৪ হাজার ২৮৫টি; যা গত বছর ছিল এক লাখ ২১ হাজার ৩৭২টি। এবার ছাগল রয়েছে চার লাখ ৪৯ হাজার; যা গত বছর ছিল দুই লাখ ৩৩ হাজার ২৩৫। হিসাবে গতবারের চেয়ে ছাগলের সরবরাহ দ্বিগুণ। ভেড়া রয়েছে ৭৬ হাজার ৩০৫ টি; যা গত বছর ছিল ৩৮ হাজার ২৪৫টি। সবমিলিয়ে এবার জেলায় তিন লাখ ২৪ হাজার ৯৭৭টির পশুর পশুর চাহিদা রয়েছে।

এদিকে, উৎপাদন ও দ্বিগুণ পশু বাজারে থাকলেও দাম অনেক বেশি চাচ্ছেন বিক্রেতারা। উৎপাদন খরচের সঙ্গে সমন্বয় করে দাম হাঁকছেন বলে দাবি ব্যবসায়ীদের। তারা বলছেন, করোনা সংকটসহ নানা অজুহাতে গোখাদ্যের দাম বেড়েছে কয়েকগুণ। খরচ হিসাবে পশুর যে দাম চাওয়া হচ্ছে, সেটা তেমন বেশি নয়।

ব্যবসায়ীদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, জেলায় কোরবানিযোগ্য খুব ভালো ভালো পশু রয়েছে। তবে বড় গরু ও মহিষের চাহিদা অনেক কম। মাঝারি ও ছোট গরুর চাহিদা বেশি।

সিটি হাটে গরু বিক্রি করতে আসা পবা উপজেলার খামারি গোলাম মোস্তফা জানান, তার ৩০টি গরু আছে। সবগুলোর ওজন পাঁচ মণের বেশি। এখন পর্যন্ত যে দাম চাইছেন, তা মাংসের বাজার অনুযায়ী চাচ্ছেন। তবে এও সত্য, গোখাদ্যের দাম বাড়ায় এবার পশুর দাম বেশি। কেউ লোকসান দিয়ে তো পশু বিক্রি করবে না।

দামকুড়ার গরু ব্যবসায়ী আইনাল হক বলেন, ‘হাটে যেসব গরু উঠেছে, তার বড় অংশই বাড়িতে পোষা। বাইরের গরু নেই। এ কারণে পশুর নায্য দাম পাচ্ছি। এবার সব জায়গায় গরুর দাম বেশি। আমরা বেশি দামে কিনে অল্প লাভে বিক্রি করছি।’

এই হাটে গরু কিনতে আসা সাগর আহমেদ জানান, তারা প্রতি বছর সাত জন মিলে পশু কোরবানি দেন। এবারও তাই। পশুর দাম অনেক বেশি। সামনে আরও বাড়তে পারে, এ জন্য আগেই কিনতে এসেছেন। অন্যান্য বছরের তুলনায় এবার প্রতিজনের ভাগে পাঁচ-সাত হাজার টাকা বাড়তি যোগ করতে হচ্ছে।

এবার চাহিদার দ্বিগুণ কোরবানির পশু আছে উল্লেখ করে জেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা ডা. জুলফিকার মো. আখতার হোসেন বলেন, ‘গত বছর ঈদুল আজহায় তিন লাখ ২৪ হাজার ৯৭৭টি পশুর চামড়া সংগ্রহ করা হয়েছিল। এটিকে এবারের কোরবানির চাহিদার লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছে। সে অনুযায়ী চাহিদার তুলনায় পশু রয়েছে দ্বিগুণ। তবে গরু ও মহিষের চেয়ে ছাগলের সংখ্যা অনেক বেশি।’

পশুপালনকারীরা উৎপাদন খরচ বিবেচনায় মূল্য নির্ধারণ করছেন উল্লেখ করে আখতার হোসেন বলেন, ‘তারা যে দাম চাচ্ছেন, তা অস্বাভাবিক না। কারণ সবকিছুর দাম বেশি। উদ্বৃত্ত পশুর সিংহভাগ দেশের বিভিন্ন প্রান্তে চলে যাবে। কিছু পশু থাকতে পারে। যেগুলো আগামী বছরের জন্য খামারিরা রেখে দেবেন।’

দেশি পশু দিয়েই কোরবানির চাহিদা পূরণ সম্ভব বলে জানালেন রাজশাহীর জেলা প্রশাসক শামীম আহমেদ। তিনি বলেন, ‘আমদানির কোনও প্রয়োজন হবে না। বরং রাজশাহীর চাহিদা মিটিয়ে দেশের বিভিন্ন প্রান্তে সরবরাহ করা যাবে এখানকার পশু। আর সীমান্ত দিয়ে ঈদে ভারতীয় গরু আসার কোনও সুযোগ নেই।’







সর্বশেষ সংবাদ

সর্বাধিক পঠিত

এই ক্যাটেগরির আরো সংবাদ