সরকার আদালতকে প্রধান অস্ত্র হিসেবে ব্যবহার করছে
|
আদালতকে অস্ত্র হিসেবে ব্যবহার করছে সরকার: মির্জা ফখরুল ফ্যাসিবাদ প্রতিষ্ঠা করতে সরকার আদালতকে প্রধান অস্ত্র হিসেবে ব্যবহার করছে বলে অভিযোগ করেছেন বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। বৃহস্পতিবার (৩ আগস্ট) নয়া পল্টনে বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি এই অভিযোগ করেন। ঢাকা মহানগর বিশেষ দায়রা জজ আদালতের গতকাল বুধবার (২ আগস্ট) দেওয়া দলের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান ও তার স্ত্রী ডা. জুবাইদা রহমানের কারাদণ্ডের প্রতিবাদে এ সংবাদ সম্মেলন করেন তিনি। বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম বলেছেন, ‘তারা প্রধান অস্ত্র হিসেবে ব্যবহার করছে বিচার বিভাগকে। এই বিচার বিভাগকে ব্যবহার করে তারা জনগণের মৌলিক অধিকার, গণতান্ত্রিক অধিকার, সাংবিধানিক অধিকারগুলো পুরোপুরি হরণ করে নেওয়া হচ্ছে। গণতান্ত্রিক আন্দোলন, গণতন্ত্রের জন্য মানুষের যে সংগ্রাম সেই সংগ্রাম স্তব্ধ করে দেওয়ার জন্য বিচার বিভাগকে দিয়ে আজ চরমভাবে গণতন্ত্রকামী মানুষকে নিপীড়ন-নির্যাতন করা হচ্ছে। বিএনপি মহাসচিব বলেন, এর আগে আমাদের এমপি ছিলেন হাবিবুল ইসলাম হাবিব, সাতক্ষীরার—তাকে ৭০ বছরের কারাদণ্ড দিয়েছে। এর আগে ঈশ্বরদীতে আমাদের নেতা মিন্টুসহ ৯ জনকে মৃত্যুদণ্ড দিয়েছে। তাদের অপরাধ, ২৫-২৬ বছর আগে পাবনায় একটা সংঘাতের ঘটনা ঘটেছিল। এই ঘটনাগুলো মিডিয়ার মাধ্যমে এমনভাবে তারা প্রচার করছে যেন এগুলো সত্য, বাকিগুলো মিথ্যা। গণমাধ্যমকেও তারা হাতিয়ার হিসেবে ব্যবহার করছে বলে অভিযোগ করেন মির্জা ফখরুল। বিএনপি মহাসচিব বলেন, বর্তমান বাংলাদেশের অস্তিত্ব প্রশ্নে যে আন্দোলন শুরু হয়েছে, জনগণ যে আন্দোলনে ঝাঁপিয়ে পড়েছে, লাখ লাখ মানুষ গত কয়েক বছর ধরে এই সংগ্রামে নেমেছে। আপনারা লক্ষ করেছেন লাখ লাখ মানুষ রাজধানীর নয়া পল্টনের মহাসমাবেশে যোগ দিয়েছেন। তাদের লক্ষ্য একটাই, গণতন্ত্র ও ভোটাধিকার প্রতিষ্ঠা করা। সেই জন্য তারা সরকারের পদত্যাগ, সংসদ বিলুপ্ত, নির্দলীয় নিরপেক্ষ সরকার প্রতিষ্ঠা এবং নতুন নির্বাচন কমিশন গঠন চেয়েছে। ঠিক সেই সময়ে চলমান আন্দোলনে যিনি নেতৃত্ব দিচ্ছেন, যিনি এই আন্দোলনে জনগণকে সম্পৃক্ত করে সারা জাতিকে ঐক্যবদ্ধ করে সঠিক খাতে নিয়ে যাচ্ছেন, আমাদের দলের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান সাহেব, তার স্ত্রী অরাজনৈতিক মানুষ ডা. জুবাইদা রহমানকে সাজা দেওয়া হয়েছে। একটি মাত্র লক্ষ্য—আন্দোলনকে স্তব্ধ করে দেওয়া, তাকে ধীরগতি করা। যেখানে মামলাই হয় না, সেখানে সাজানো মামলা দিয়ে তাদের এই সাজা দেওয়া হয়েছে। তিনি বলেন, প্রথম থেকেই এই সরকার আদালতকে ব্যবহার করছে। এই যে কেয়ারটেকার সরকার ইস্যুটি নিয়ে গভীর রাজনৈতিক সংকট তৈরি হয়েছে, তাও কিন্তু আদালতকে নিয়ে। বিচারপতি খায়রুল হকের ক্রিমিনাল অফেন্সে অনৈতিকভাবে রায়। তিনি তার রায়ে সংবিধান থেকে কেয়ারটেকার সরকার বাতিল করে দলীয় সরকারের অধীনে নির্বাচনের ব্যবস্থা করে জাতিকে চিরস্থায়ীভাবে সংঘাতের দিকে নিমজ্জিত করেছেন এবং অনিশ্চয়তার দিকে ঢেলে দিয়েছেন। এই সরকার আদালত, গণমাধ্যম, প্রশাসনসহ রাষ্ট্রযন্ত্রকে পুরোপুরি ব্যবহার করেছে। মির্জা ফখরুল বলেন, আমাদের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান ও তার স্ত্রী ডা. জুবাইদা রহমানকে বেআইনিভাবে অন্যায়ভাবে এবং রাজনৈতিক প্রতিহিংসার কারণে এই যে সাজা দেওয়া হয়েছে, ইতোমধ্যে জনগণ কিন্তু তার প্রতিবাদ করেছে। গতকাল রায় ঘোষণার সঙ্গে সঙ্গে সমগ্র দেশে প্রতিক্রিয়া হয়েছে এবং হাজার হাজার, লাখ লাখ মানুষ রাস্তায় নেমে তার প্রতিবাদ করেছে। এই রায়ের প্রতিবাদে আমরা (বিএনপি) শুক্রবার (৪ আগস্ট) সারাদেশে মহানগর ও জেলা পর্যায়ে বাদজুমা প্রতিবাদ সমাবেশের ঘোষণা করছি। ঢাকা মহানগর উত্তর-দক্ষিণ এবং ঢাকা জেলার যৌথ উদ্যোগে নয়া পল্টনে কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনে সমাবেশ হবে দুপুর ২টায়। |