অন্তঃসত্ত্বা নারীর নামাজ পড়ার নিয়ম
|
গর্ভাবস্থায় একজন মাকে অসুস্থতা ও তীব্র কষ্টের মধ্য দিয়ে যেতে হয়। মায়ের গর্ভাবস্থার কষ্টের কথা উল্লেখ করে কোরআনে আল্লাহ তাআলা বলেছেন, وَوَصَّيْنَا الْإِنسَانَ بِوَالِدَيْهِ إِحْسَانًاحَمَلَتْهُ أُمُّهُ كُرْهًا وَوَضَعَتْهُ كُرْهًا আর আমি মানুষকে তার মা-বাবার প্রতি সদয় ব্যবহারের নির্দেশ দিয়েছি। তার মা তাকে অতিকষ্টে গর্ভে ধারণ করেছে এবং অতি কষ্টে তাকে প্রসব করেছে। (সুরা আহকাফ: ১৫) গর্ভাবস্থায় যেহেতু দীর্ঘক্ষণ না খেয়ে থাকা কষ্টকর, অনেক ক্ষেত্রে মা বা সন্তানের ক্ষতি হতে পারে, তাই অন্তঃসত্ত্বা নারীদের রমজানের রোজা রাখার ক্ষেত্রে ছাড় দেওয়া হয়েছে। নিজের বা গর্ভের সন্তানের জন্য ক্ষতিকর মনে করলে তারা রমজানের রোজা ভেঙে পরবর্তীতে কাজা করতে পারেন। রাসুল (সা.) বলেছেন, إِنَّ اللَّهَ تَعَالَى وَضَعَ عَنِ الْمُسَافِرِ الصَّوْمَ وَشَطْرَ الصَّلاَةِ وَعَنِ الْحَامِلِ أَوِ الْمُرْضِعِ الصَّوْمَ আল্লাহ্ তা’আলা মুসাফির লোকের রোজা মাফ করেছেন ও অর্ধেক নামাজ কমিয়ে দিয়েছেন আর অন্তঃসত্ত্বা ও স্তন্যদানকারী নারীদের রোজা মাফ করে দিয়েছেন। (সুনানে তিরমিজি) তবে গর্ভাবস্থায় নামাজের হুকুম অন্য সময়ের মতোই, যেহেতু সাধারণত নামজ পড়া এ সময় অসম্ভব বা অতি কষ্টকর হয় না। গর্ভাবস্থার শেষ দিকে কারো পক্ষে যদি রুকু-সেজদা করা অসম্ভব হয়ে পড়ে, তাহলে সে তার সাধ্য অনুযায়ী নামাজ পড়বে। দাঁড়িয়ে রুকু-সেজদা করা অসম্ভব হলে বসে নামাজ পড়বে। বসেও সেজদা করতে অক্ষম হলে হাত জমিনে রেখে তার ওপর সিজদা করবে। এটাও অসম্ভব হলে হাত সামনে রেখে যতটুতু ঝুঁকতে পারে ততটুকু ঝুঁকে ইশারায় সিজদা আদায় করবে। ইশারায় সিজদার সময় সামনে টেবিল, বালিশ বা অন্য কোনো উঁচু জিনিস রেখে তাতে সিজদা করবে না বরং শুধু ইশারা করবে। আব্দুল্লাহ (রা.) বলেন, রাসুল (সা.) একবার একজন রোগীকে দেখতে গিয়ে দেখলেন, তিনি বালিশের ওপর সিজদা করছেন। তিনি বালিশটি সরিয়ে রাখলেন। তখন ওই ব্যক্তি একটি কাঠের টুকরা নিলো তার ওপর সিজদা করার জন্য। রাসুল (সা.) কাঠের টুকররোটি নিয়ে ফেলে দিলেন এবং বললেন, على الأرضِ إنِ استطعتَ وإلا فأَوْمِئْ إيماءً واجعل سجودكَ أخفضَ من ركوعِكَ তুমি সক্ষম হলে জমিনের উপর সিজদা করবে, না পারলে ইশারা করবে। সিজদায় রুকুর চেয়ে বেশি ঝুঁকবে। (সুনানে বাইহাকি: ৩৪৮৪) অন্তঃসত্ত্বা নারীর নামাজের বিধান অসুস্থ ব্যক্তির মতোই। সে তার সাধ্য অনুযায়ী নামাজ পড়বে। সম্ভব হলে জমিনের ওপর সিজদা করবে অথবা ইশারায় সিজদা করবে। |