মঙ্গলবার ২২ অক্টোবর ২০২৪ ৬ কার্তিক ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

আমাদের প্রতিটি বাহিনী সবসময় জনগণের পাশে দাঁড়ায়: প্রধানমন্ত্রী
প্রকাশ: রবিবার, ০৯ জুলাই ২০২৩, ০৭:৫০ অপরাহ্ণ

দেশে-বিদেশে মানুষের পাশে দাঁড়ানোয় সশস্ত্র বাহিনীর প্রশংসা করেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। আজ বুধবার (৫ জুলাই) ঢাকা সেনানিবাসের সদর দফতরে প্রেসিডেন্ট গার্ড রেজিমেন্টের (পিজিআর) ৪৮তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির ভাষণে তিনি বলেন, আমাদের প্রতিটি বাহিনী দেশের স্বাধীনতা ও সার্বভৌমত্ব রক্ষার পাশাপাশি সবসময় জনগণের পাশে দাঁড়ায়।

শেখ হাসিনা বলেন, বাহিনীর সদস্যরা পেশাদারিত্ব ও নিষ্ঠার সঙ্গে তাদের দায়িত্ব পালনের পাশাপাশি শুধু দেশেই জনগণের পাশে দাঁড়ায়ই না, অধিকন্তু বিদেশে শান্তিরক্ষা মিশনেও কাজ করে। তাদের মানবিক সদিচ্ছার কারণে তারা সাধারণ মানুষের কাছ থেকে সম্মান পায়। আমি খুব গর্ববোধ করি, যখন রাষ্ট্র ও সরকারপ্রধানরা তাদের দেশে অবদান রাখার জন্য বাংলাদেশি শান্তিরক্ষীদের প্রশংসা করেন।

প্রধানমন্ত্রী রেজিমেন্টের প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উপলক্ষে গার্ডগুলোর সব সদস্যকে আন্তরিক শুভেচ্ছা ও অভিনন্দন জানান।

প্রেসিডেন্ট গার্ড রেজিমেন্টের (পিজিআর) ৪৮তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীর উপলক্ষে কেক কাটেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা (ছবি: ফোকাস বাংলা)
শেখ হাসিনা বলেন, সরকারপ্রধান হিসেবে তিনি পিজিআরকে খুব কাছ থেকে দেখেছেন। তাদের কাজ, দায়িত্ব ও নিষ্ঠা দেখে তিনি মুগ্ধ। তিনি জানেন যে রেজিমেন্টের সদস্যরা সর্বদা পেশাদারিত্ব, আনুগত্য, শৃঙ্খলা ও আন্তরিকতার সঙ্গে তাদের দায়িত্ব পালন করেন।

তিনি বলেন, ঝড়-বৃষ্টিসহ সব প্রতিকূল আবহাওয়া মোকাবিলা করে দায়িত্ব পালনে আপনাদের আন্তরিকতা অত্যন্ত প্রশংসিত। এই সুনাম ধরে রাখতে আপনারা সততা ও দেশপ্রেমের সঙ্গে কাজ করবেন- এটাই আমার প্রত্যাশা।

প্রেসিডেন্ট গার্ড রেজিমেন্টের (পিজিআর) সদস্যদের সঙ্গে শুভেচ্ছা বিনিময় করেন প্রধানমন্ত্রী (ছবি: ফোকাস বাংলা)
শেখ হাসিনা বলেন, তার সরকার ঝুঁকিপূর্ণ রক্ষীদের ঝুঁকি বিবেচনা করে প্রথমে পিজিআরের জন্য ঝুঁকি ভাতা চালু করে। ইতোমধ্যে সরকার গণভবন সংলগ্ন ব্যারাক তৈরি এবং গার্ডদের পরিবারের জন্য ১৪ তলা ভবন নির্মাণের মাধ্যমে আবাসন সমস্যার সমাধান করেছে।

জাতির পিতা ১৯৭৫ সালের ৫ জুলাই পিজিআর গঠন করেন। প্রধানমন্ত্রী আরও বলেন, বঙ্গবন্ধু তাঁর নিজস্ব উদ্যোগে একটি স্বাধীন ও সার্বভৌম দেশের জন্য উপযুক্ত সমর শক্তি গড়ে তুলেছিলেন।

প্রেসিডেন্ট গার্ড রেজিমেন্টের (পিজিআর) সদস্যদের খোঁজ-খবর নেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা (ছবি: ফোকাস বাংলা)
সশস্ত্র বাহিনীর সার্বিক উন্নয়নে তার সরকারের নেওয়া বিভিন্ন পদক্ষেপের কথা উল্লেখ করে তিনি বলেন, আমরা সব বাহিনীকে আন্তর্জাতিক মানের ব্যবস্থায় রূপান্তরিত করেছি। বাহিনীগুলোকে সক্ষম করা হয়েছে, যাতে তারা বৈশ্বিক বাহিনীগুলোর সঙ্গে তাল মিলিয়ে এগিয়ে যেতে পারে। বিশেষ করে বিদেশে শান্তিরক্ষা মিশনে যেখানে তারা অন্যান্য বিশ্ববাহিনীর সঙ্গে কাজ করে।

তিনি বলেন, সরকার সশস্ত্র বাহিনীকে আধুনিক ও যুগোপযোগী করে গড়ে তোলার লক্ষ্যে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান প্রণীত প্রতিরক্ষা নীতি-১৯৭৪-এর সঙ্গে সঙ্গতি রেখে ফোর্সেস গোল-২০৩০ বাস্তবায়ন করছে।

প্রেসিডেন্ট গার্ড রেজিমেন্টের (পিজিআর) ৪৮তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীর অনুষ্ঠানে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা (ছবি: ফোকাস বাংলা)
তিনি বলেন, উন্নয়ন ও অগ্রগতির স্বীকৃতি হিসেবে বাংলাদেশ ইতোমধ্যে স্বল্পোন্নত দেশ থেকে উন্নয়নশীল দেশের মর্যাদা অর্জন করেছে। আমরা দেশকে এমনভাবে গড়ে তুলছি, যাতে কখনও অন্যের ওপর নির্ভর করে এগিয়ে যেতে না হয়। আগামী দিনেও দেশের অগ্রযাত্রা অব্যাহত থাকবে এই কামনা করি।

বিশ্বব্যাংকের দুর্নীতির মিথ্যা অভিযোগের উল্লেখ করে তিনি বলেন, সরকার নিজস্ব অর্থায়নে পদ্মা সেতু নির্মাণ করেছে। এরপর উন্নয়ন সহযোগীরা এখন আর আগের বছরগুলোর মতো অনেক শর্ত দেয় না।

প্রধানমন্ত্রী জাতির পিতার স্বপ্নের বাংলাদেশকে ২০৪১ সালের মধ্যে ক্ষুধা ও দারিদ্র্যমুক্ত একটি উন্নত, সমৃদ্ধ ও স্মার্ট দেশ হিসেবে গড়ে তোলার অঙ্গীকার পুনর্ব্যক্ত করেন।

প্রেসিডেন্ট গার্ড রেজিমেন্টের (পিজিআর) সদস্যদের সঙ্গে ছবি তোলেন প্রধানমন্ত্রী (ছবি: ফোকাস বাংলা)
অনুষ্ঠানস্থলে পৌঁছালে সেনাপ্রধান জেনারেল এস এম শফিউদ্দিন আহমেদ এবং পিজিআর কমান্ডার ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মোহাম্মদ খালেদ কামাল প্রধানমন্ত্রীকে স্বাগত জানান। প্রধানমন্ত্রী অনুষ্ঠানস্থলের চারপাশে হেঁটে সব অফিসার এবং জুনিয়র কমিশনড অফিসারদের সঙ্গে কুশল বিনিময় করেন। পরে প্রধানমন্ত্রী পিজিআরের প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উপলক্ষে কেক কাটেন।

তিনি ভিভিআইপি দায়িত্ব পালনের সময় গুরুতর আহত ও নিহতদের পরিবারের সদস্য এবং পিজিআর সদস্যদের মধ্যে উপহার বিতরণ করেন।

প্রধানমন্ত্রীর নিরাপত্তা বিষয়ক উপদেষ্টা মেজর জেনারেল (অব.) তারেক আহমেদ সিদ্দিক এবং বাংলাদেশের রাষ্ট্রপতির সামরিক সচিব মেজর জেনারেল এস এম সালাহউদ্দিন ইসলাম মঞ্চে উপস্থিত ছিলেন। অনুষ্ঠানে অন্যান্যের মধ্যে প্রধানমন্ত্রীর সংশ্লিষ্ট সচিব এবং ঊর্ধ্বতন বেসামরিক ও সামরিক কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন। সূত্র: বাসস।







সর্বশেষ সংবাদ

সর্বাধিক পঠিত

এই ক্যাটেগরির আরো সংবাদ