মঙ্গলবার ৩০ এপ্রিল ২০২৪ ১৭ বৈশাখ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

কিশোর ফাহিমকে বিদায় জানালেন মালয়েশিয়ার স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী
প্রকাশ: শুক্রবার, ০৭ এপ্রিল ২০২৩, ০২:১৩ পূর্বাহ্ণ

বশির আহমেদ ফারুক,মালয়েশিয়া: কনটেইনারে করে মালয়েশিয়ায় যাওয়া বাংলাদেশি কিশোর রাতুল ইসলাম ফাহিমকে বিমানবন্দরে বিদায় জানালেন মালয়েশিয়ার স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী সাইফ উদ্দিন নাসুশন ইসমাইল।২১ ফেব্রুয়ারি মঙ্গলবার স্থানিয় সময় রাত ৭ টা ৪৫ মিনিটে মালয়েশিয়া এয়ারলাইন্সের একটি ফ্লাইটে কিশোর ফাহিমকে নিয়ে কুয়ালালামপুর থেকে যাত্রা শুরু করে বাংলাদেশ সময় আনুমানিক রাত ৯ টা ৪৫ মিনিটে ঢাকার হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে পৌঁছবে।

এদিকে মালয়েশিয়ার স্থানিয় সময় সন্ধ্যা ৬ টায় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী সাইফুদ্দিন নাসুশন ইসমাইল ও দেশটিতে নিযুক্ত বাংলাদেশের হাইকমিশনার মো. গোলাম সারোয়ার মালয়েশিয়ার আন্তর্জাাতিক বিমানবন্দরে ছুটে যান ফাহিমকে বিদায় জানাতে ।
এ সময় বিমানবন্দরে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী সাংবাদিকেদের বলেন, কন্টেইনারে আটকে পড়া বাংলাদেশি কিশোরকে টেংকু আম্পুয়ান রহিমাহ হাসপাতালে (এইচটিএআর) চিকিৎসার পর সেইফহোম থেকে কিশোর ফাহিমকে ঢাকায় ফেরত পাঠানো হয়েছে।”আমরা তদন্ত করেছি ফাহিম কোনো মানব পাচারের সাথে জড়িত নয়। “ফাহিম সম্পূর্ণ সুস্থ না হওয়া পর্যন্ত সেই সময়ের মধ্যে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় বাংলাদেশ দূতাবাসের সহায়তায় তার ভ্রমণের নথি প্রস্তুত করা হয়।

“স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, প্রধানমন্ত্রী, দাতুক সেরি আনোয়ার ইব্রাহিম কর্তৃক মানবতার মানবিক প্রকৃতি দেখানোর জন্য সিভিল মালয়েশিয়ার অগ্রগামী নীতির একটি প্রকাশ।
কিশোর ফাহিমকে বাংলাদেশে তার পিতামাতার নিকট হস্তান্তর করার নিমিত্তে হাইকমিশনের একজন কল্যাণ সহকারী ফাহিমের সঙ্গে ঢাকায় গিয়েছেন।

গত ১২ জানুয়ারি বাংলাদেশের চট্টগ্রাম সমুদ্র বন্দর থেকে মালয়েশিয়ার উদ্দেশ্যে ছেড়ে আসা মার্শাল আইল্যান্ড কোম্পানির পতাকাবাহী একটি মার্কেন্টাইল জাহাজ ‘এমভি ইন্টিগ্রা’ গত ১৭ জানুয়ারি মালয়েশিয়ার ক্লাং সমুদ্র বন্দরে পৌঁছায়। ঐ দিন রাতে জাহাজ হতে কন্টেইনার খালাসের সময় একটি কন্টেইনারের ভেতরে রাতুল ইসলাম ফাহিম বাংলাদেশী কিশোরকে উদ্ধার করা হয়। এরপর স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী সাইফুদ্দিন নাসুশন ইসমাইল জানিয়েছেন, ‘ফাহিম’ নামের ওই বাংলাদেশি কিশোর মানব পাচারকারীদের খপ্পরে পড়েছিল বলে তারা মনে করছেন না। কিশোরটির শারীরিক অবস্থা স্থিতিশীল আছে এবং তাকে সেইফহোমে রাখা হয়েছে।

সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে কিশোর ফাহিমের বিষয়টি ব্যাপক প্রচার হয়। বিষয়টি মালয়েশিয়াস্থ বাংলাদেশ হাইকমিশনের দৃষ্টিগোচর হওয়ার সাথে সাথেই হাইকমিশন হতে ক্লাং সমুদ্র বন্দর কর্তৃপক্ষের সাথে যোগাযোগ করে কিশোর ফাহিমের প্রাথমিক চিকিৎসা সম্পন্ন করে একটি এনজিও এর তত্ত্বাবধানে তাকে নিরাপদ আশ্রয়ে রাখা হয়।

কিশোর ফাহিমকে দ্রুত দেশে প্রেরণের লক্ষ্যে তার পরিচয় নিশ্চিত হওয়ার জন্য বাংলাদেশে তার পরিবার ও স্থানীয় প্রশাসনের সাথে বাংলাদেশ হাইকমিশন হতে যোগাযোগ করা হলে জানা যায়, সে কুমিল্লার মনোহরগঞ্জ উপজেলার ঝলম দক্ষিণ ইউনিয়নের সাতপুকুরিয়া গ্রামের মো. ওমর ফারুক ও রোকেয়া বেগম দম্পতির ছেলে। পেশায় দিনমজুর ফারুকের ৩ ছেলের মধ্যে ফাহিম সবার বড়। পরিবার জানিয়েছে, ফাহিম এপিলেপ্সিতে আক্রান্ত।

কয়েক মাস আগে সে তার নিজ ঠিকানা কুমিল্লার মনোহরগঞ্জ থেকে হারিয়ে যায়। সে কুমিল্লা থেকে যে কোন ভাবে চট্টগ্রাম চলে যায় এবং চট্টগ্রাম সমুদ্র বন্দরের ‘এমভি ইন্টিগ্রা’ জাহাজের কন্টেইনারে ঢুকে পড়ে।

কিশোর ফাহিমকে দেশে প্রেরণে তার নামে বাংলাদেশ হাইকমিশন থেকে ট্র্যাভেল পাশ ইস্যু করা হয় এবং তাকে বাংলাদেশে ফেরত পাঠানোর নিমিত্তে মালয়েশিয়ার ইমিগ্রেশন কর্তৃপক্ষ ও স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়কে অনুরোধ করা হলে। সেপ্রেক্ষিতে তারা সকল প্রকার সহযোগিতা প্রদান করেছেন।
এদিকে হাইকমিশনারের নির্দেশে ডেপুটি হাইকমিশনারের নেতৃত্বে হাইকমিশনের একটি প্রতিনিধিদল তাকে দেখতে যানএবং হাইকমিশন থেকে কিশোর ফাহিমকে সর্ব প্রকার সহায়তা প্রদান করা হয়।







সর্বশেষ সংবাদ

সর্বাধিক পঠিত

এই ক্যাটেগরির আরো সংবাদ