সোমবার ১৬ জুন ২০২৫ ২ আষাঢ় ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

নানা সমস্যায় জর্জরিত চাঁদপুরের মতলব জে বি সরকারি পাইলট উচ্চ বিদ্যালয়
প্রকাশ: মঙ্গলবার, ২০ মে ২০২৫, ০৯:১৫ পূর্বাহ্ণ

 

অমরেশ দত্ত জয়ঃ প্রায় ৮ শতাধিক শিক্ষার্থীর শিক্ষাঙ্গণ চাঁদপুরের মতলব জে বি সরকারি পাইলট উচ্চ বিদ্যালয় এখন নানা সমস্যায় জর্জরিত। এরমধ্যে বিদ্যালয়টির জমিতে ৭৬টি দোকানের লিজ ও দখল বাণিজ্য মহামারী ধারণ করেছে। যা থেকে পরিত্রাণ দেখতে প্রশাসনিক কঠোর হস্তক্ষেপ এখন যেনো সময়ের দাবী।

২০ মে মঙ্গলবার দুপুরে বিদ্যালয়টিতে গেলে এসব তথ্য পাওয়া যায়।

বিদ্যালয়টির সাবেক শিক্ষার্থী নিয়াজ আহমেদ জিসান, শাহরিয়ার সেলিম,মোঃ তানভীর, মোঃ নবির হোসেন,ইনসান আহমেদসহ অন্যরা বলেন,সাম্প্রতি মতলবের প্রাচীন শিক্ষা প্রতিষ্ঠান জে বি সরকারি পাইলট উচ্চ বিদ্যালয়ের রাস্তা বের করার পরিকল্পনায় গিয়ে দোকান উচ্ছেদ ও ফলজ গাছ কেটে ফেলার অভিযোগ উঠে বিদ্যালয়টির প্রধান শিক্ষকের বিরুদ্ধে। যেখানে তিনি একটি চিকিৎসালয় করার পরিকল্পনা করার অভিযোগ রয়েছে। যার কারনে এসব ঘটনার সুষ্ঠু তদন্তসহ বিদ্যলায়টির দোকানগুলোর বকেয়া ভাড়া পরিশোধসহ এগুলো কারা দখলে রয়েছে সে জবাব চাচ্ছি আমরা প্রতিষ্ঠানটির সাবেক শিক্ষার্থীরা। আশা করি প্রশাসন সুষ্ঠু তদন্তের মাধ্যমে এর একটা চমৎকার উত্তর মতলববাসীকে দিবে।

বিদ্যালয়ের জমিতে দোকান পরিচালনাকারী ভাড়াটিয়া বোরহান। তিনি জানান, আমি এই জমির মূল মালিক নই। আমি ২৫০০ টাকা দোকান ভাড়া দিচ্ছি। যদিও খবর নিয়ে জানা গেলো এই জমির মালিক ওবায়েদ নামে একজন। যিনি বিদ্যালয়কে দিচ্ছেন নাম মাত্র ভাড়া।

আবার বিদ্যালয়ের জমিতে লীজ নিয়ে দোকানদারি করা বজলু নামে একজন জানান, আমরা শুধু মাটি লীজ নিয়েছি। পরে এখানে নিজেরা নিজেদের মতো করে স্থাপনা তৈরি করে দোকানদারি করছি। আমি ৪শ’ টাকা করে মাসে মাসে দিচ্ছি বিদ্যালয়ের কেরানী মুজাম্মেলকে।

দোকানী সাগর ও জনার্ধন নামের আরও কয়েকজন জানান, দোকানগুলোর নির্ধারিত ভাড়া বিদ্যালয় কর্তৃপক্ষকে নিয়মিত দেয়া হচ্ছে। তবে এগুলোর দখলে নামে বেনামে লোক তা স্বীকার করছি।

এদিকে নির্ভরযোগ্য সূত্র বলছে, ২০০৭ সাল হতে বিদ্যালয়টির জমি যে যার মতো করে লীজ নিয়ে ৭৬টি দোকান যত্রতত্র গড়ে তুলেছেন। পরে বিদ্যালয় কর্তৃপক্ষকে এসব দোকান ভাড়া বাবদ নাম মাত্র ফি ২০০, ৪০০, ৫০০ বা ১২০০ টাকা দোকানের জমির আকার অনুযায়ী ভাড়া নির্ধারিত করা হয়। যদিও সে ভাড়াটুকুও সংশ্লিষ্টরা দিচ্ছিলো না বিদ্যালয় কর্তৃপক্ষকে। কিছু জমি দখলও হয়ে গিয়েছে। এছাড়াও যাদের নামে দোকান সেগুলো তারা নিজেরা আবার অপর পক্ষের কাছে বিদ্যালয়ের বরাদ্দকৃত ভাড়ার ১০/১২ গুণ বেশি ভাড়ায় দিয়ে রেখে নিজেদের পকেট ভাড়ী করছে বছরের পর বছর।

এসব তথ্য নিশ্চিত করে মতলব জে বি সরকারি পাইলট উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক(ভারপ্রাপ্ত) মোঃ মনজিল হোসেন বলেন, এই দোকানগুলোর বকেয়া ভাড়া আদায় এবং জমি পুরুদ্ধারে নেমেই আমি তোপের মুখে নানা ষড়যন্ত্রের মুখে পড়েছি। আমি কোন চিকিৎসালয়ের পরিকল্পনাও নেই নি যেসব কথা আমার বিরুদ্ধে উঠেছে। যদিও গাছ কাটার বিষয়টি নিয়ে আমি অনুতপ্ত এবং ভুল হয়েছে মর্মে সবার কাছে দুঃখ প্রকাশ করছি। তবে আমি ৭৬টি দোকানের ৮ লাখ ৫৪ হাজার টাকা বকেয়া বিল এখন পর্যন্ত আদায় করেছি এবং আরও প্রায় ৬ লাখ টাকার মতো বকেয়া রয়েছে সেগুলোও আদায়ের চেষ্টা অব্যাহত রেখেছি। আমি চাই এই বিদ্যালয়টির জমি পুনোরুদ্ধার হউক।

এ বিষয়ে চাঁদপুরের অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক মোঃ এরশাদ খান বলেন, সরকারি বিদ্যালয়ের জমিতে দোকান থাকা যাবে কিনা, জমি পুনোরুদ্ধার এবং দোকানগুলোর বকেয়া ভাড়া আদায়সহ গাছ কেটে ফেলার প্রসঙ্গে বিধি মোতাবেক ব্যবস্থা নেয়ার আশ্বাস দিচ্ছি। স্থানীয়ভাবে কিছু তদন্ত হয়েছে সেগুলোর রিপোর্টও আমাদের কাছে এসেছে। প্রয়োজনে এখান থেকেও আমরা তদন্ত টিম করে ব্যবস্থা নিবো।

এদিকে অচিরেই বিদ্যালয়ের জমিতে থাকা সকল দোকানের বকেয়া বিল আদায়সহ এসব লীজ বাতিল করে বিদ্যালয়টির সুন্দর্যবর্ধক কাজ শুরু করা এবং এসব জায়গায় শিক্ষক-শিক্ষার্থীদের জন্য অন্যান্য প্রয়োজনীয় ভবন নির্মাণের দাবী প্রাক্তণ শিক্ষার্থীদের।







সর্বশেষ সংবাদ

সর্বাধিক পঠিত

এই ক্যাটেগরির আরো সংবাদ